পরীক্ষার ফলে কেন মেয়েরা এগোচ্ছে?

মেয়েদের এমন সাফল্য অব্যাহত থাকুক l ছবি: প্রথম আলো
মেয়েদের এমন সাফল্য অব্যাহত থাকুক l ছবি: প্রথম আলো

ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা গেছে, এই পরীক্ষাগুলোতে পাসের হারে ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা এগিয়ে আছেন। যদিও ফলাফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ছাত্ররা এখনো এগিয়ে আছেন। শুধু এবারের এইচএসসি পরীক্ষায়ই নয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে, প্রায় পরীক্ষায়ই ছাত্রীরা পাসের হারে এগিয়ে থাকছে। একটা সময় ছিল অনেক পরিবার ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের কম গুরুত্ব দিত। এখন আর সেটা হয় না। বরং এখন অনেক বাবা-মা মেয়েদের প্রতি বেশি যত্নবান হন। ঢাকার কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, কেন মেয়েরা ভালো ফল করছে। মেয়েরা যেহেতু সমাজের নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখছে, পরিবারকে আর্থিকভাবেও সাহায্য করছে, এমনকি কোনো কোনো পরিবারে মেয়েসন্তানটিই সব দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে মা-বাবা মেয়েদের লেখাপড়ার গুরুত্ব বুঝতে পারছেন। বেশির ভাগ পরিবার মেয়েদের বাইরে ঘোরাফেরা, আড্ডা দেওয়া পছন্দ করে না। বাড়িতেই বেশি সময় কাটাতে হয়। ফলে তাঁরা সেই সময় কাজে লাগান। লেখাপড়া করেন। গবেষণা বলে, মেয়েরা স্থির, বুদ্ধিমান ও গভীরভাবে চিন্তা করতে পারেন। সামাজিক নানা কারণে তাঁরা সুযোগ পান না। সুযোগ পেলে যোগ্যতা প্রমাণ করে দেন।

এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজধানীর নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম। তাঁর মতে, মেয়েদের কাছে রেখে অভিভাবকেরা যতটা যত্ন নিতে পারেন, সেটা ছেলেদের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কিছুটা কম হয়। ছেলেরা বেশি বহির্মুখী হয়। এটাও একটা কারণ।

 এবার মোট ১১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্য পাস করেছেন ৮ লাখ ১ হাজার ৭৭১ জন। ১০ বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। এর মধ্য ছাত্রীদের পাসের হার ৭০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৬৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৫৩৫ জন এবং ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৭ হাজার ৪৩৪ জন।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলছিলেন, এটা কিন্তু সত্য যে মেয়েরা তুলনামূলকভাবে পড়াশোনায় বেশি আন্তরিক। এ ছাড়া এখন অভিভাবকেরা আর আগের মতো ছেলেমেয়ের মধ্যে পার্থক্য করেন না। উপবৃত্তিসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন তিনি।

এই যে মেয়েরা ভালো ফল করছে, এটা আরও অনেক পরিবারকে উৎসাহিত করবে মেয়েদের লেখাপড়া করার সুযোগ করে দিতে।