কর্মজীবী নারীদের আড্ডা

কর্মক্ষেত্রে হতাশা, সামাজিক নানা বাঁধা, পারিবারিক টানাপোড়েন সবকিছু নিয়েই কথা বলতে গত শুক্রবার কর্মজীবী নারীরা এসেছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি মিলনায়তনে। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে সাইকো-সোশ্যাল স্কুল মনের বন্ধু আয়োজিত এই আড্ডাকে আরও রঙিন করে তোলে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এর সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মেখলা সরকার, গণমাধ্যম কর্মী মিথিলা ফারজানা, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ফারহানা এ রহমান, চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট জারিন মাহমুদ হোসাইন এবং মনোবিদ অ্যানি বাড়ৈ এর উপস্থিতি। 

একই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে নারী এবং পুরুষের প্রতি আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা, সহকর্মীদের মনোভাব, নারীর সাফল্যকে নিয়ে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা, পরিবারের কাছে নারীর প্রতিনিয়ত নিজের শুদ্ধতা প্রমাণ করা সবকিছুই উঠে আসে এই আলাপে।
ডাঃ মেখলা সরকার বলেন, মূলত নিজের দুর্বলতাকে ঢাকতে গিয়ে সাধারণত অন্যের সাফল্যকে বিভিন্নভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটা চেষ্টা আমাদের মাঝে দেখা যায়। এটা ছেলে মেয়ে দুই ক্ষেত্রেই ঘটে কিন্তু আমাদের যেহেতু সমাজটা পিতৃতান্ত্রিক তাই আমরা কোনো মেয়ে ভালো কিছু করছে বা করতে পারবে এই ব্যাপারটা সহজে মানতে পারি না। এটা আমাদের নৈতিকতা বা শিক্ষার জায়গায় যে দুর্বলতাটা রয়ে গেছে তা ফুটিয়ে তোলে।
অপরদিকে কর্মক্ষেত্রে একজন নারীকে প্রতিনিয়ত তিনি যে একজন শুদ্ধ মানুষ বা তিনি নৈতিকতা বিরোধী কিছু করছেন না-এই ব্যাপারে মিথিলা ফারজানা বলেন, একজন নারীকে সব সময়ই একটা জবাবদিহির মধ্য দিয়ে যেতে হয় কেননা তিনি একজন নারী। একজন পুরুষ যখন একই কাজ করে রাত করে বাড়ি ফিরছে তখন বিষয়টা যতটা সহজভাবে নেওয়া হয়, একজন নারী ওই একই কাজই করে বাড়ি ফিরলে সেটা সমাজ কোনোভাবেই সোজা চোখে দেখে না। এখন আসলে সময় এসেছে এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর।
একজন নারীর চারপাশে এত সব প্রতিবন্ধকতার কারণে কি নারী এগিয়ে যাবে না তাহলে? অবশ্যই যাবে। নিজেকে স্থির এবং নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে দৃঢ় রাখতে মনোবিদ অ্যানি বাড়ৈ তাই সারা দিনে কিছুটা সময় নিজেকে সময় দেওয়া, নিজের ইতিবাচক দিকগুলোকে নিয়ে ভাবা, যা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই সেই সব বিষয়কে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। কেননা, একমাত্র নারীর নিজের মানসিক শক্তিই পারবে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে।