সবুজ হোক বাংলাদেশ

পরিবেশ দিবসে জাগোর কর্মীরা
পরিবেশ দিবসে জাগোর কর্মীরা

বিজ্ঞান যে মানুষের শুধু কল্যাণকামী তা-ই নয়, আজ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে এর পরিবেশধ্বংসী অকল্যাণ-মূর্তির জন্যও। এ কারণে জরুরি হয়ে পড়েছে সবার মাঝে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া। জাগো ফাউন্ডেশন ও ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ (ভিবিডি) কিছুটা ব্যতিক্রমী ঢঙে পালন করল এবারের পরিবেশ দিবসটি। বৃক্ষরোপণ, বৃক্ষ সংরক্ষণ ও সেই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব বাহনের ধারণাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হলো একটি অন্য রকম অভিযান! অভিযানের গল্পটির ছিল তিনটি অধ্যায়। দেশে ক্রমেই কমছে গাছের সংখ্যা। তাই দেশের সবুজ বাড়ানোকে কেন্দ্র করে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে অনুষ্ঠিত হয় ‘সবুজ হোক বাংলাদেশ’ নামের প্রথম পর্বটি। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের ১২টি জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাগানো হয় এক হাজার ১৩টি চারাগাছ, আর খ্যাতনামা করপোরেট কোম্পানিগুলোতে পাঠানো হয় আরও এক হাজারটি চারা, এভাবে মোট সংখ্যাটি দাঁড়ায় ২০১৩-তে! ‘স্কুলের শিশুদের বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করতে পেরে গর্বিত বোধ করছি,’ বলছিলেন জাগোর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী জোবাইয়া মানতাসা। গল্পের দ্বিতীয় অধ্যায়ে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের উদ্যোগে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ‘সবুজ বার্তা’। তথ্যসমৃদ্ধ ও উপদেশমূলক ব্যানারের মাধ্যমে এ বার্তা দেশবাসীকে চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা ও দেশের অন্যান্য বনসমৃদ্ধ এলাকায় অবৈধ গাছ কাটা বন্ধের প্রতি সচেতন করে তোলে।

যানজটের কালো থাবা আর যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় জর্জরিত এ শহরের কলুষ দূর করার একটি বিকল্প হতে পারে অভিযানের তৃতীয় পর্বের নায়ক ‘সবুজ বাহক দ্বিচক্রযান।’ বায়ুদূষণ কমানো তো বটেই, সাইকেলের ব্যবহার একদিকে যেমন শরীরকে রাখবে ‘ফিট’, অপর দিকে এটির ব্যবহার যানজট কমিয়ে নগরবাসীকে দেবে প্রশান্তি।

৭ জুন সকাল সাতটা ৩০ মিনিটে ঝুম বর্ষার মধ্যেই ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে শুরু হয় জাগোর সাইকেল শোভাযাত্রা। বৃষ্টির বাধা উপেক্ষা করে জাগোর স্বেছাসেবক তরুণেরা বর্ষাস্নাত পিচঢালা পথে মজা করে চালাতে থাকেন সাইকেল। পান্থপথ দিয়ে এফডিসি ঘুরে সাইকেল আরোহীরা প্রবেশ করে হাতিরঝিল প্রকল্পে। এখানে খানিক বিরতি শেষে গুলশান-১ ও ২, সবশেষে গুলশান লেডিস পার্কে সমাপ্তি ঘটে এ শোভাযাত্রার। এরপর সব স্বেচ্ছাসেবকের হাতে তুলে দেওয়া হয় সনদপত্র।

পরিবেশ দিবসে ‘সুরক্ষিত হোক পরিবেশ, বিকশিত হোক মানবতা’ স্লোগানের মাধ্যমে দেশের তরুণ প্রজন্মের মানসপটে এভাবেই জাগিয়ে তোলে পরিবেশ ও মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতন-বোধ। জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি করভি রাক্সান্দ বলেন, ‘পরিবেশদূষণ আমাদের জীবনযাত্রায় হুমকিস্বরূপ হওয়ার আগেই আমাদের এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর এখনকার তরুণেরাই যেহেতু ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ভার বহন করবেন, এটি তাঁদের অনুপ্রাণিত করার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।