মুন্নির পাশে আমরা
ছোটখাটো গড়নের মেয়ে মুন্নি, পুরো নাম সাবরিনা মমতাজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী। তার বন্ধুরা এবার এমএ ক্লাসে উঠল। আমার ক্লাসে সে মনোযোগী ছাত্রী ছিল, পড়াশোনায় ভালো করার প্রত্যয় ছিল, নিষ্ঠা ছিল, চোখভরা স্বপ্নও ছিল। কিন্তু এখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকে, আর প্রার্থনা করে রোদভরা আকাশ দেখবে, বন্ধুদের সঙ্গে দূরে কোথাও বেড়াতে যাবে, জীবনের নানা উৎসবে অংশ নেবে।
কিন্তু জীবনটা তার ইচ্ছামতো সাজে না। মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে হারিয়েছে যে যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। মুন্নির ক্যানসার ধরা পড়ে কয়েক বছর আগে। মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে সে চিকিৎসা নিতে যায়। তার যখন কেমো চলছে, মা মৃত্যুশয্যায়। মুন্নি তাঁকে শেষবারের মতো দেখার জন্য ছুটে এসেছিল। এখন তার ভরসা বড় ভাই, এক বোন। কিন্তু তাঁদের সংগতি নেই যে মুন্নির চিকিৎসার খরচ তাঁরা দেন।
এই ছোট্ট লেখার শিরোনামে যে ‘আমরা’র কথা বলছি, তাতে আমি আছি খুব অল্পখানি জায়গাজুড়ে, আমার সব সহকর্মীও আছেন, কিন্তু বড় জায়গা নিয়ে আছে মুন্নির সহপাঠীরা, তার বিভাগের অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা, তার বন্ধুবান্ধবেরা। মুন্নি শুয়ে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ১০২ নম্বর কেবিনে, হেমাটোলজি বিভাগের তত্ত্বাবধানে। তার যে রোগ, সেটি ভালো করা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। রোগটির নাম ব্লাড ক্যানসার। ডাক্তারি নামটা ভয় ধরানো, না-ইবা বললাম।
মুন্নির চিকিৎসাটা ব্যয়বহুল। এ পর্যন্ত অনেক টাকা গেছে। ইংরেজি বিভাগের সবাই মিলে তাকে সাহায্য করেছে, অনেক হৃদয়বান মানুষও করেছেন। ভালোই হচ্ছিল সে, কিন্তু সেপ্টেম্বর ২০১৭-তে ক্যানসার ফিরে আসে। এখন খুব জরুরি তার বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করানোটা, কিন্তু সে জন্য খরচ হবে ৫০ লাখ টাকা।
আমরা যতটা পারি করছি। কিন্তু তা তো যথেষ্ট নয়। অথচ মেয়েটির বেঁচে থাকা দরকার। এ রকম প্রাণবন্ত, হাসিখুশি, বন্ধুবৎসল একটি মেয়ে, দেশকে যে অনেক কিছু দিতে চায়, তাকে তো চলে যেতে দেওয়া যায় না।
মুন্নি আমাদের সঙ্গে থাকবে, জীবনে ফিরে আসবে, তার নিরুদ্দেশ স্বপ্নগুলো খুঁজে এনে সেগুলো দেখতে থাকবে, যদি শিরোনামের ‘আমরা’র দলে অনেক মানুষ জড়িয়ে পড়েন।
আমি মুন্নির মতো তরুণদের বলছি, মুন্নির পাশে তোমরা দাঁড়াও। ‘আমরা’ হয়ে যাও।
সমাজের হৃদয়বান যাঁরাই আছেন, তাঁদের কাছেও আমার একই আবেদন।
মুন্নির জন্য যাঁরা সহায়তা দেবেন, তাঁরা নিচের ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা দিতে পারেন।
মো. ইলিয়াস, মো. রুমান, অ্যাকাউন্ট নম্বর ৪৪০৫৭০১০২৪৬৭৯, সোনালী ব্যাংক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শাখা।
মুন্নির সুস্থতার জন্য আমাদের সবার প্রার্থনা।
লেখক: অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।