নারী অধিকারে সোচ্চার তাঁরা

>

যেকোনো সামাজিক ইস্যুতে তারকারা সচেতন। বিশেষ করে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তারকারা সব সময়ই সোচ্চার। এমনই কয়েকজন তারকার কথা থাকছে এবারের আয়োজনে।

বিয়ন্সে

মিস কার্টার ট্যুরের (ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় এটা বিয়ন্সের পঞ্চম কনসার্ট সফর) সময় গোটা গোটা অক্ষরে ফেমিনিস্ট শব্দটা লেখার আগে বিয়ন্সে দ্য শ্রিভার রিপোর্ট-এ একটি লেখা লেখেন। দ্য শ্রিভার রিপোর্ট সাধারণত সচেতনতা, নারী অধিকার, মানবাধিকার বিষয়ে লেখা প্রকাশ করে। এতে বিয়ন্সে লেখেন, কেন লিঙ্গসমতা মানুষের কাছে বাস্তব জীবনের কথা মনে হয় না? তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের ছেলেদের শেখাতে হবে লিঙ্গসমতা এবং অন্যকে সম্মান দেখানো। তারা যখন বড় হবে, প্রাকৃতিকভাবে এটা তারা শিখবে। অনেক কিছু করতে হবে আমাদের। এটা সম্ভব যদি আমরা একসঙ্গে কাজ করি। একটা দেশের ৫০ শতাংশ নারী থাকে এবং ভোটাধিকার থাকে ৫০ শতাংশ নারীর। ফলে আমাদের দাবি জানাতে হবে, সবকিছুতে শতভাগ সুযোগ পাওয়ার।’

অ্যাডেল

রোলিং স্টোন সাময়িকীতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই জনপ্রিয় গায়িকা গর্বের সঙ্গে জোরালোভাবে উচ্চারণ করেন, ‘আমি একজন নারীবাদী।’

সেই সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সব মানুষ একই রকম জীবন পাওয়ার অধিকার রাখে—লিঙ্গ, বর্ণ যা-ই হোক না কেন।’

কোনো কিছুকে তোয়াক্কা করেন না অ্যাডেল। যত বড় চুক্তি বা ব্যবসায়িক সভাই হোক না কেন, তাঁর নারীবাদী সত্তায় আঘাত লাগলে কঠোরভাবে মুখের ওপর না করে দেন। কাউকেই পাত্তা দেন না তিনি।

ভিক্টোরিয়া বেকহাম

নারীর ক্ষমতায়ন, অধিকার রক্ষা বিষয়ে সব সময় সচেতন ভিক্টোরিয়া বেকহাম। তাঁর ইনস্টাগ্রাম অনুসরণ করলে প্রমাণ মিলবে। এক বার্তায় লিখেছিলেন, আজকাল সর্বত্র নারীদের সমর্থন দিতে পেরে গর্বিত মনে হচ্ছে। নারীর অধিকার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অবশ্যই আমাদের সবাইকে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

ভিক্টোরিয়া তাঁর পোশাক ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রেও নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি মাথায় রাখেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানে বেশির ভাগ কর্মীই নারী। পোশাক ও জুতা এমনভাবে তৈরি করেন, যাতে নারীরা আরাম বোধ করেন। ভোগ সাময়িকীতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানিয়েছিলেন।

এমা ওয়াটসন

‘লিঙ্গসমতা আনতে আমরা চেষ্টা করেছি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও কম বয়সী ছেলে সবার মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে। তারা যেন নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে নারী-পুরুষের সমতা আনতে কাজ করে।’ হলিউড অভিনেত্রী এমা ওয়াটসন জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ২০১৪ সালে এ কথা বলেন। ওই বছরই তিনি জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নারী-পুরুষের সমতা আনতে ‘হিফরশি’ কর্মসূচি চালু করেন। এ কথা বলেই থেমে থাকেননি এমা। চালিয়ে গেছেন লিঙ্গসমতা আনার লড়াই। এমার মতে, নিজেকে নারীবাদী বলার আগে লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে কাজ করতে হবে, কথা বলতে হবে।

২০১৬ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে আরও জোরালোভাবে নিজের মতামত তুলে ধরেন এমা। ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, নিরাপত্তা হলো অধিকার, এটা কোনো বিশেষ সুযোগ নয় কারও জন্যই। হোক তিনি নারী, কোনো সংখ্যালঘু বা অন্য কোনো অসহায় কেউ। সম্মান ও বিশ্বাসের সঙ্গে এই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি এমন হবে, যাতে একজন নারী বা অন্য কোনো ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘিত হলে মনে করতে হবে যে নিজের অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। তাহলেই সত্যিকার অর্থে নির্যাতন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।’

ডেমি লোভেটো

নারীর সবকিছু গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে; পুরুষের বেলায় যেমন নেওয়া হয়। বিখ্যাত গায়িকা ডেমি লোভেটো বলেন এ কথা। মেয়েশিশুর ভ্রূণ হত্যা কোনো অবস্থাতেই করা যাবে না, হিলারি ক্লিনটনদের সঙ্গে তিনিও এ ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন। নিজের টুইটারে নারী ইস্যুতে পরিষ্কার ও জোরালোভাবে মতামত তুলে ধরেন। ‘নিজেকে প্রস্তুত করেছি নারী ইস্যুতে, নারী অধিকার রক্ষায় কাজ করার জন্য।’ বলেন ডেমি লোভেটো।

গ্রন্থনা: তৌহিদা শিরোপা সূত্র: ইনস্টাইল, ভোগ।