একটা শক্তিশালী চরিত্র খুঁজছিলাম: গ্যাল গ্যাদত

>

হলিউডের অভিনয়শিল্পী গ্যাল গ্যাদত। ওয়ান্ডার ওম্যান হিসেবেই বিশ্বজোড়া তাঁর পরিচিতি। ১৮ বছর বয়সে মিস ইসরায়েলের মুকুট পরেছিলেন। কাজ করেছেন সে দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে। গত ১১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত ২৩তম ‘ক্রিটিকস চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্য বেশ আলোচিত হয়েছে

গ্যাল গ্যাদত
গ্যাল গ্যাদত

অভিনয়জীবনের শুরু থেকেই বারবার আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। ‘আপনার স্বপ্নের চরিত্র কোনটা?’ প্রতিবারই আমি খুব স্পষ্টভাবে বলেছি, আমি একজন স্বাধীন, শক্তিশালী নারী চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। যে চরিত্র সত্যিকার অর্থেই নারীর শক্তিটা ফুটে উঠবে। তখনো আমি জানতাম না, ওয়ান্ডার ওম্যান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আমার হবে। সেই শুরু থেকে যে চরিত্রটা আমি মনে মনে খুঁজছিলাম, ওয়ান্ডার ওম্যান ঠিক তাই। একজন হৃদয়বান, শক্তিশালী, সহানুভূতিশীল ও ক্ষমাশীল মানুষ। সে ভুলগুলোকে শোধরাতে চায়। আশপাশের সবাই যখন হাত গুটিয়ে বসে থাকে, সে তখন সঠিক কাজটা করতে চায়। সে সারা পৃথিবীর মানুষের নজর কেড়ে নিতে জানে। আর এসব কাজের মাধ্যমেই সে মানবতার জন্য একটা অনুকরণীয় উদাহরণ তৈরি করে।

আবার দেখুন, ওয়ান্ডার ওম্যানকেও তাঁর ভালোবাসা ও আশার জন্য লড়াই করতে হয়। সে দ্বিধায় ভোগে, নিরাপত্তাহীনতা তাঁকেও ভাবায়। সে কিন্তু একজন নিখুঁত মানুষ নয়। ভালো-মন্দের মিশেলে এই মানবিক গুণাবলিই তাঁকে আরও বাস্তবিক করে। ওয়ান্ডার ওম্যান একটি দেশের নয়, সারা বিশ্বের। আমরা সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কাছেই তাঁকে একটা অনুপ্রেরণাদায়ী চরিত্র হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। আবার এটাও মাথায় রেখেছি, ওয়ান্ডার ওম্যান একজন নারী, এই বিষয়টাই যেন মুখ্য হয়ে না যায়।

এই সিনেমা তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমার বিশ্বাস, আমরা দর্শককেও অনুপ্রাণিত করতে পেরেছি। চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় যখন আমি পা রেখেছি, তখন নারীপ্রধান সিনেমা খুব বেশি তৈরি হতো না। এমনকি নারী পরিচালকের সংখ্যাও কম ছিল। অথচ এ বছর দেখুন, সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবিগুলোর মধ্যে তিনটি ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছেন কোনো না কোনো নারী। এমনকি এই তিনটি ছবির মধ্যে একটির পরিচালকও একজন নারী, আমার প্রিয় প্যাটি জেনকিনস (ওয়ান্ডার ওম্যান ছবির পরিচালক)। সেরা ১০০ ছবির মধ্যে আটটি ছবির নির্মাতা নারী। এটা কেবল শুরু, নিশ্চয়ই আমাদের আরও অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে।

প্যাটি কিছুদিন আগে আমাকে একটা মজার ঘটনা বলল। তিন বছরের একটা ছেলে নাকি ওয়ান্ডার ওম্যান দেখে বলেছে, ‘বড় হয়ে আমি মেয়ে হতে চাই।’ অতএব আমি মনে করি, একজন শিল্পী কিংবা একজন পরিচালক হিসেবে কেবল মানুষকে বিনোদিত করাই আমাদের দায়িত্ব নয়; বরং আমাদের দায়িত্ব হলো মানুষকে অনুপ্রাণিত করা। ভালোবাসতে শেখানো, শ্রদ্ধা করতে শেখানো আমাদের কাজ।

কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস ধরে আমরা আমাদের চারপাশে একটা আন্দোলন গড়ে উঠতে দেখেছি। আমার পুরস্কার আমি সেই সব নারী ও পুরুষের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চাই, যাঁরা সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন। আপনাদের সবাইকে কথা দিচ্ছি, সত্য প্রকাশে আমি কখনো পিছপা হব না। একসঙ্গে এগিয়ে যাব, সমতার জন্য এক হয়ে কাজ করব।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ: মো. সাইফুল্লাহ

সূত্র: এলি ডট কম