কোমল ত্বকে অস্বস্তি নয়

মডেল: আলমিত্রা
মডেল: আলমিত্রা

হাসিখুশি ছোট্ট শিশুটি ভুগছে খুব। সারা দিন হেসেখেলে কাটত যার, এখন একদমই স্বস্তিতে নেই সে। ডায়াপার র্যাশে ভুগছে কি শিশুটি? এ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (শিশু বিভাগ) গোপেন কুমার কুণ্ডু।
ডায়াপার র্যাশ একধরনের ত্বকের অসুখ। এই সমস্যাটি তখনই হয়, যখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিশুর কোমল ত্বক ঢেকে থাকে নোংরা, ভেজা ডায়াপারে। যখন শিশুরা দুধের পাশাপাশি শক্ত খাবার খেতে শেখে, তখনই ডায়াপার র্যাশ বেশি উঠতে দেখা যায়। শক্ত খাবারে অভ্যস্ত হওয়ার সময় শিশুদের পেটের অবস্থার পরিবর্তন হয়। মলমূত্রের ধরনও হঠাৎ করে পরিবর্তিত হয়।
যেসব শিশুর অ্যালার্জির সমস্যা বেশি, তাদেরও ডায়াপার র্যাশ হওয়ার ভয় বেশি থাকে। মা ছাড়াও যিনি শিশুকে দেখাশোনা করেন, তাঁকে বিশেষ যত্নশীল হতে হবে। কারণ, ডায়াপার র্যাশ শিশুদের জন্য বিশেষ ভোগান্তির কারণ।
ডায়াপার র্যাশ লালচে দানার মতো। সাধারণত ঘামাচির মতো দেখতে। র্যাশ উঠলে একই সঙ্গে চুলকায় আর ব্যথা করে। শিশুর দেহের যে অংশগুলো ডায়াপার দিয়ে ঢাকা থাকে সে অংশেই র্যাশ ওঠে। সাধারণত নবজাতক ও দুই বছরের নিচের শিশুদের এই র্যাশ হয় বেশি। তবে বড় শিশুদেরও হতে পারে পরিচ্ছন্নতার অভাবে।

অভিভাবকের একটু সচেতনতাই ধরে রাখবে শিশুর এমন উচ্ছ্বলতা। মডেল: আলমিত্রা
অভিভাবকের একটু সচেতনতাই ধরে রাখবে শিশুর এমন উচ্ছ্বলতা। মডেল: আলমিত্রা

র্যাশ প্রতিরোধে যা করবেন
 মা বা যিনি শিশুকে পরিচর্যা করেন তাঁকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তাঁর দেহে কোনো ছোঁয়াচে চর্ম বা অন্যান্য রোগ থাকলে শিশুও তাতে আক্রান্ত হতে পারে।
 যতবার ডায়াপার পরিবর্তন করবেন, ততবার পরিচর্যাকারীর হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
 ডায়রিয়া চলার সময় শিশুর প্রতি হতে হবে আরও যত্নশীল।
 ভেজা গায়ে শিশুকে ডায়াপার পরাবেন না। গোসল বা মোছানোর পর শিশুর ত্বক ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে তবেই ডায়াপার পরান। নোংরা ডায়াপার খুলে ফেলার পর ত্বকের ভেজা স্থান ভেজা টিস্যু বা খুব নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
 একটানা সাধারণত চার ঘণ্টার বেশি একই ডায়াপার পরিয়ে রাখা উচিত নয়। প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর দেখুন শিশু ডায়াপার ভিজিয়ে ফেলেছে কি না।
 অনেক সময় ডায়াপার খোলার পরে দেখা যায়, তা শুকনাই রয়ে গেছে। অনেকে এটি রোদে শুকিয়ে আবার ব্যবহার করেন। যা একদম ঠিক নয়। এতে রোগ-জীবাণু আক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে।
 মেয়াদ উত্তীর্ণ ডায়াপার ব্যবহার করবেন না। কেনার আগে দেখে নিন।
 ডায়াপার খোলার পর সঙ্গে সঙ্গেই আরেকটি পরাবেন না। শিশুর ত্বকে কিছুক্ষণ বাতাস লাগতে দিন। তারপর সম্ভব হলে হালকা করে পাউডার দিয়ে দিতে পারেন। র্যাশ হওয়ার আশঙ্কা কিছুটা কমবে। তবে পাউডারে শিশুর অ্যালার্জি আছে কি না, বুঝে নিন।

 ডায়াপার ছাড়া অপরিচ্ছন্ন কাপড় থেকেও র্যাশ হতে পারে। তাই নবজাতক ও শিশুকে পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত কাপড় পরান।
 ডায়াপারের প্যাকেট খোলার পরে খোলা প্যাকেটে যেন পিঁপড়া, তেলাপোকা বা অন্য পোকামাকড় ঢুকে না যায়, তার দিকে খেয়াল রাখুন।
 র্যাশের কারণে শিশু খুব অস্বস্তি বোধ করলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।