'বড় হয়ে অফিসার হব'

রিকশাসহ আল–আমিন, ছবি: এহসান-উদ-দৌলা
রিকশাসহ আল–আমিন, ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

ঘরে অসুস্থ বাবা, মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। তাতে সংসার চলে না। যশোরের আল-আমিন তাই বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামে। দুবেলা রিকশা চালায়। এক বেলা স্কুলে যায়, পড়াশোনা করে
কোন ক্লাসে পড়ো তুমি?
ক্লাস ফোরে।
স্কুলের নাম কী? নিয়মিত যাও?
কারবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রোজ যাই।
বয়স কত তোমার?
বাবা বলেছে ১২ বছর।
এই বয়সে রিকশা চালাও, কষ্ট হয় না? ঠিকমতো চালাতে পারো?
কষ্ট তো লাগেই। কী আর করা! বাবা (আবদুর রহিম) অসুস্থ। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা ইনকাম হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়ে...। কিন্তু রিকশা আমি চালাতে পারি ঠিকঠাক। পাঁচ মাস ধরে রিকশা চালাই। আজ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
সবাই ওঠে তোমার রিকশায়? ভাড়া কম দেয় কেউ?

বড়রা অনেকে উঠতে চায় না। বলে, তুমি ছোট মানুষ টানতে পারবা না। মাঝেমধ্যে দু-একজন যাত্রী ভাড়া কম দিয়ে কেটে পড়তে চায়।
তুমি স্কুলে যাও কখন?
সকাল আটটায় রিকশা নিয়ে বের হই। ১১টা পর্যন্ত চালিয়ে বাসায় (যশোর শহরের খরকি এলাকায়) এসে ভাত খেয়ে ১২টার দিকে স্কুলে যাই। বিকেল চারটায় স্কুল থেকে ফিরি। আসরের আজানের পর আবার রিকশা নিয়ে বের হই।
রোজ কত টাকা আয় হয়?
কোনো দিন আড়াই শ, কোনো দিন সাড়ে তিন শ টাকা হয়। কোনো কোনো দিন চার শ টাকাও হয়ে যায়।
তোমার স্কুলের কথা বলো। বড় হয়ে কী হতে চাও?
স্কুল আমার খুব ভালো লাগে। বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে ভালো লাগে। স্কুলে সবাই আমার কষ্টের কথা জানে। আমার বন্ধুরা কেউ আমার মতো এত পরিশ্রম করে না। আমি বড় হয়ে অফিসার হব।
অন্য আলো প্রতিবেদক