Thank you for trying Sticky AMP!!

আমাদের জন্য দুই-একটা বই করলে ক্ষতি হতো না

স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনার স্টলে এসে দৃষ্টিহীনরা বই পড়তে পারে। ছবি: প্রথম আলো

বইয়ের পাতায় দুই হাত রেখে নাজিয়া শব্দ করে পড়ে যাচ্ছেন। উৎসুক লোকজন পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় একটু থমকে দাঁড়ান। নাজিয়ার পড়া শোনেন, কীভাবে পড়ছেন তা–ও দেখেন। বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনার স্টলে নাজিয়াদের দেখা মিলবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজিয়া হাসান চোখে দেখতে পান না। ব্রেইলপদ্ধতিতেই পড়াশোনা। বইমেলায় তিনি গল্পের বই পড়ার জন্য চলে আসেন স্পর্শ ব্রেইলের স্টলে। বই পড়তে নাজিয়া ভীষণ ভালোবাসেন। নাজিয়া বলেন, ‘গল্পের বই আমার খুব পছন্দ। আম্মু আমাকে বই পড়ে শোনাত। ব্রেইলপদ্ধতিতে খুব বেশি বই পড়তে পারিনি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বই কম।’

নাজিয়া জানান, বড় বইয়ের চেয়ে ছোট বই ব্রেইল করা হয়। কারণ, সাধারণ বইয়ের এক পৃষ্ঠা ব্রেইল করতে কমপক্ষে আড়াই পৃষ্ঠার দরকার হয়। এতে খরচও বেশি। বড় বড় লেখক বা সাহিত্যের বই ব্রেইলে খুবই কম। সেগুলো পড়ার সুযোগ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের হয় না।
নাজিয়া আক্ষেপ করে বলেন, ‘সব স্টল যদি একটা বা দুটো বইও ব্রেইল করত ওদের খুব একটা ক্ষতি হতো না। আমরা কিনেই পড়তাম। জনপ্রিয় লেখক, গবেষণা বা আলোচিত বইগুলো হলে ভালো হতো। স্পর্শ বাদে কেউই উদ্যোগটা নিচ্ছে না। এখন বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে বই অডিও আকারে শোনা যায় কিন্তু তাতে হাতে নিয়ে বই পড়ার আনন্দ পাওয়া যায় না।’

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য একমাত্র স্টল স্পর্শ ব্রেইল ২০১১ সাল থেকে বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় বইমেলায় অংশ নিচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানের সদস্য সাজেদা সুলতানা বলেন, ২০০৯ সালে তাঁরা প্রথম ব্রেইল বই প্রকাশ করেন। এ বছর নতুন ৮টি ব্রেইল বই এসেছে। এ পর্যন্ত স্পর্শের মোট ৬৯টি বই প্রকাশিত হয়েছে। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের ছড়ার বইও ব্রেইল করা হয়েছে। সাজেদা জানান, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বেশি আসেন।

এ স্টল থেকে ব্রেইল বই বিক্রি হয় না। আগ্রহী ব্যক্তিরা বিনা মূল্যে নিতে পারবেন। বিনা মূল্যে স্পর্শ ব্রেইলের বই পেতে হলে স্টলে এসে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। পরবর্তী সময়ে একটি প্রকাশনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রেজিস্টারকৃত দৃষ্টিহীনদের বই দেওয়া হয়। গত বছর ১২০ জনের বেশি ব্যক্তি বই নিয়েছেন। তবে চাইলে যে কেউ স্টলে বসেই বই পড়ার সুযোগ পায়।