এ অব্দি
পৃথিবীকে আঁকা হয়েছে যেন তা নাশপাতি
মানে স্তন
কিন্তু স্তন আর সমাধিফলকের ফারাক
নিছক যান্ত্রিক কারসাজি
নিউইয়র্ক
চার পাঅলা এক সভ্যতা, যার প্রতিটি অভিমুখে হত্যা
হত্যার দিকে ছুটে যাওয়া এক পথ
অথচ দূরে ডুবন্তের গোঙানি।
নিউইয়র্ক
এক নারী—নারীমূর্তি
এক হাতে তুলে ধরা লিবার্টি নামের ছিন্ন কাগজ
আমরা বলছি ইতিহাস,
আরেক হাতে সে গলা চেপে ধরেছে পৃথিবী নামে এক শিশুর
নিউইয়র্ক
আলকাতরা রঙের এক শরীর। কোমরে প্যাঁচানো ভেজা বন্ধনী, মুখ তার রুদ্ধ জানালা...আমি বলেছি, ওয়াল্ট হুইটম্যান সেটি খুলে দেবেন—আমি উচ্চারণ করেছি আসল পাসওয়ার্ড—কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত এক দেবতা ছাড়া কেউ তা শোনেনি। জেলবন্দী, ক্রীতদাস, খ্যাপা, চোর আর অসুস্থরা বেরিয়ে আসছে তার গলা দিয়ে; অথচ তাদের বেরোনোর উপায় নেই, নেই পথ। আমি বলেছি, ব্রুকলিন ব্রিজ! কিন্তু এ সেতুর যোগ হুইটম্যানের সঙ্গে ওয়াল স্ট্রিটের, সবুজ পাতার সঙ্গে ডলারের...
নিউইয়র্ক-হার্লেম
রেশমের গিলোটিনে ওই কে আসে?
হাডসন নদীর মতো দীর্ঘ ওই কে যায় কবরখানায়?
ফেটে পড়ো, ও অশ্রুর শাস্ত্রাচার; মেশো, ও উদ্বেগের যা কিছু বিষয়। নীলতা, হলুদতা,
গোলাপ, বেলি;
আলো শানাচ্ছে তার সুই, তার খোঁচায় জন্ম নিয়েছে সূর্য। ও ক্ষত, দুই ঊরুর ভেতরে গোপন;
ঊরু, তুমি কি ঝলসে গেছ? মৃত্যুর পাখি
দেখতে এসেছিল তোমাকে? তুমি কি শুনেছ যন্ত্রণার শেষ আক্ষেপ? একটি দড়ি
আর গলা পেঁচিয়ে ধরেছে বিষণ্নতাকে,
আর রক্তে প্রহরের নৈঃসঙ্গ।
নিউইয়র্ক-ম্যাডিসন-পার্ক অ্যাভিনিউ-হার্লেম
আলস্য যেন কাজ, কাজ যেন আলস্য। হৃৎপিণ্ড
স্পঞ্জে রুদ্ধ, হাত ভরে আছে খাগড়ায়।
ময়লার স্তূপ আর এম্পায়ার স্টেটের মুখোশ থেকে
উদিত হচ্ছে ইতিহাস, ঢাকনার পর ঢাকনায় জমে আছে দুর্গন্ধ:
দৃশ্য অন্ধ নয়, বরং মাথা,
শব্দ নগ্ন নয়, বরং জিভ।
নিউইয়র্ক-ওয়াল স্ট্রিট-টোয়েন্টি ফিফথ স্ট্রিট-ফিফথ স্ট্রিট
ঘাড় আর ঘাড়ের মাঝখানে উঠে দাঁড়াচ্ছে মেডুসার ভূত।
সব জাতির ক্রীতদাসের এক বাজার। মানুষ বাঁচছে
কাচঘরের বাগানে উদ্ভিদের মতো। লাঞ্ছিত, গায়েবি প্রাণীরা
মহাশূন্যের বুনটে ধুলোর মতো ঢুকে যায়—সর্পিল শিকার।
সূর্য এক শ্রাদ্ধজাগরণ
দিবালোক কালো এক ঢোল।