সবুজপত্রের সবুজ 'বীরবল'

প্রমথ চৌধুরী (৭ আগস্ট ১৮৬৮-২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬), প্রতিকৃতি: মাসুক হেলাল
প্রমথ চৌধুরী (৭ আগস্ট ১৮৬৮-২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬), প্রতিকৃতি: মাসুক হেলাল

সেদিন কথা হচ্ছিল এক সাহিত্যামোদী বন্ধুর সঙ্গে। ঢাকা থেকে বর্তমানে প্রকাশিত একটা ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকার নাম উল্লেখ করে বন্ধু বলল, ‘পত্রিকাটা ভালো।’ বন্ধুটি আরও যোগ করল, ‘ঢাকায় এই সময়ের সাহিত্য পত্রিকাগুলোর মধ্যে এটাই সেরা...।’ থামিয়ে দিয়ে বললাম, ‘আচ্ছা বাংলাদেশের সাহিত্যে এই পত্রিকাটির প্রভাব কী? নতুন কোনো চিন্তা বা সাহিত্যধারাকে উসকে দিচ্ছে বা শনাক্ত করছে? “উৎকৃষ্ট” এই পত্রিকাটি বের না হলে কোনো লাভ-ক্ষতি হবে?’ বন্ধুটি দম নিয়ে বলল, ‘না মানে ইয়ে...সেই অর্থে বলিনি। বলছি পত্রিকাটার কাগজ ভালো। ঝকঝকে ছাপা। অনেক মানুষের লেখা ছাপে। নিয়মিত বের হয়। এই আর কি...।’ বন্ধুর কথার ফাঁকে ফাঁকে ভাবছিলাম আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয় বিরাট কিছু করে ফেলেছে, যুগান্তর ঘটিয়েছে এমন পত্রিকা বাংলা সাহিত্যে কোনটা, তাহলে উত্তরটা কী দেব। তখন খুব বেশি ভাবনা ছাড়া চট করে মাথার মধ্যে একটা পত্রিকার নাম ঘাই মেরে উঠল—সবুজপত্র (১৯১৪)। আর সঙ্গে সঙ্গে চোখা নাক, চিকনচাকন শরীর এবং চশমা পরা বুদ্ধিদীপ্ত চোখের একজন সাহিত্যিক-সম্পাদকের নাম ভেসে উঠল চোখের সামনে। তিনি প্রমথ চৌধুরী (১৮৬৮-১৯৪৬)। সবুজপত্র নামের একটি পত্রিকা দিয়ে তিনি হাজার বছরের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস থেকে ১৯১৪ সংখ্যক একটি সালকে জন্মের দেড় শ বছর পরেও দখল করে রেখেছেন। এ এক বিস্ময়কর ব্যাপারই বটে!

প্রমথ চৌধুরী কী করেছিলেন সেই পত্রিকায়? অনেক কিছু করেছিলেন! সবচেয়ে বড় যে কাজটি করেছিলেন তা হচ্ছে, বাংলা গদ্যে, বিশেষত প্রবন্ধে তারুণ্য আর প্রাণের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যুগের স্পন্দন আর সৃজনের উন্মাদনাকে উসকে দিয়েছিলেন। তারুণ্য, যৌবন, নতুন সুর ও স্বরকে শনাক্ত করেছিলেন এবং সবুজপত্রতে তা পত্রস্থ করেছিলেন। এই পত্রিকার মাধ্যমেই তিনি প্রথাগত চিন্তার জগদ্দল পাথরকে মুখের ওপর ‘না’ বলে দিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথকে দিয়ে পুরাতন ও প্রথার উদ্দেশে বলিয়ে নিয়েছিলেন, ‘ওই যে প্রবীণ, ওই যে পরম পাকা,/চক্ষু-কর্ণ দুইটি ডানায় ঢাকা,/ঝিমায় যেন চিত্রপটে আঁকা...।’ তাঁর তারুণ্যদীপ্ত চিন্তার পাল্লায় পড়েই রবীন্দ্রনাথ সবুজপত্র পত্রিকায় লিখেছিলেন বিখ্যাত কবিতা ‘সবুজের অভিযান’: ‘ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা,/ওরে সবুজ ওরে অবুঝ,/আধমরাদের ঘা দিয়ে তুই বাঁচা।’ (রবীন্দ্র-রচনাবলী, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২৪৪) সে সময় সমাজের অধিকাংশ মানুষ মনে করতেন, ‘যৌবনকে টিকা (প্রতিষেধক) দেওয়া অবশ্যকর্তব্য, তাহাকে বসন্তের হস্ত হইতে রক্ষা করিবার জন্য।’ কিন্তু সবুজপত্র পত্রিকার পৃষ্ঠাতেই তো তিনি প্রস্তাব করেছিলেন ‘টিকা’ দিয়ে যৌবনকে প্রতিরোধ করা নয় বরং ‘যৌবনে দাও রাজটিকা’ (রাজতিলক)। কারণ যৌবন এবং তারুণ্যই একটি সমাজকে সচল রাখে, সামনের দিকে নিয়ে যায়।

সাহিত্যিক গদ্য হিসেবে চলতি ভাষারীতির প্রবর্তনও প্রমথ চৌধুরীর এই তারুণ্যের আর প্রাণের আরাধনারই নামান্তর। সাধু ভাষাকে তিনি মনে করতেন কৃত্রিম ভাষারীতি। এ যেন ওই ‘চিত্রপটে আঁকা ঝিমানো পুরাতন’। ঊনবিংশ শতাব্দীর পণ্ডিত-মুন্সিদের হাতুড়ি-বাটালের পিটুনিতে যে গদ্যরীতিটি গড়ে উঠেছিল তাকে প্রমথ চৌধুরী প্রাণহীন বলে সাব্যস্ত করেছেন। কারণ এই ভাষা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততার প্রতিনিধিত্ব করে না। মসিকে অসি বানিয়ে সাধুবাদীদের বিরুদ্ধে, ‘অনুস্বারবাদীদের’ বিরুদ্ধে, সংস্কৃতপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে তাঁকে। সেই লড়াইয়ের চিহ্ন বহন করছে সেই সময়ের সবুজপত্র পত্রিকার প্রায় প্রতিটি সংখ্যা।

বাংলা ভাষায় প্রমথ চৌধুরীর এই অবদান অত্যন্ত গুরুতর। কারণ তিনি বাংলা গদ্যভাষাকে তার স্বভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, গণমানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর বীরবল ও বাংলা সাহিত্য বইয়ে একেই বলেছেন, ‘তিনি বাংলা গদ্যকে জীবনীশক্তি দিয়েছেন।’ (পৃ. ৬২) প্রমথ দেখিয়েছিলেন, বাংলা ভাষার শরীরে সংস্কৃতের দৌরাত্ম্য বড়ই বেমানান। বাংলা ভাষার শরীরে অকারণ সংস্কৃত শব্দের সমাহারকে তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গসরস্বতীর কানে পরের সোনা।’ যেমন তিনি বলেছেন, ‘ঘরের ছেলে ঘরে যাও, ঘরের ভাত বেশি করে খেয়ো’—এই বাক্যটি হতে কোথাও “ঘর” তুলে দিয়ে “গৃহ” স্থাপনা করে দেখুন তো কানেই বা কেমন শোনায়, আর মানেই বা কত পরিষ্কার হয়।’ (প্রবন্ধসংগ্রহ, পৃ. ২৫৮) এ কারণে রবীন্দ্রনাথও তাঁর শব্দতত্ত্ব বইয়ে বাংলার নিজস্ব চলন-বলনের কথা বোঝাতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলার সংস্কৃত অংশের ব্যাকরণ এবং নিজ বাংলার ব্যাকরণ এক নহে।’ প্রমথ চৌধুরী তাঁর ভাষাবিষয়ক লেখা আর নিজের গদ্যে মৌখিক কথ্যভঙ্গির সমাবেশ ঘটিয়ে আদতে বাংলা ভাষার মূল স্বভাবকে আবিষ্কার করতে চেয়েছেন। যাঁকে রবীন্দ্রনাথ হয়তো বলতেন, ‘প্রাকৃত বাংলা।’ বইয়ের ভাষা কখনোই চৌধুরীর আদর্শ ছিল না। ফলে নিজের গদ্যে অবলীলায় তিনি ব্যবহার করতে পেরেছেন ‘কান্নিমারা’, ‘গোত্তা মারা’, ‘খরমাঞ্জা’, ‘ফেটির সুতো’ ইত্যাদি শব্দ। বর্তমানে আমরা যে গদ্যচর্চা করি, সেই গদ্য কি এখনো প্রমথ চৌধুরীর আবিষ্কৃত বাংলা গদ্যের চালকে ধারণ করতে পারে?

এখানেই সার্ধশত বর্ষ পরেও প্রমথ চৌধুরীর প্রাসঙ্গিকতা। প্রমথ চৌধুরীর গদ্য পড়া মানে বাংলা ভাষার নিজস্ব এমন এক চালের সঙ্গে হেঁটে চলা, যা হয়তো অনুবাদেও ধরা সম্ভব না। একটা ভাষার যতটুকু অনুবাদে ধরা যায় না ততটুকুই তো ওই ভাষার নিজস্বতা।

শুধু বাংলা ভাষার নিজস্বতা আবিষ্কারই নয়, বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্য প্রমথ চৌধুরীর কাছে আরও এক দিক থেকে ঋণী। এই দিকটি হলো, গদ্যে তীক্ষ্ণ রসবোধের সঞ্চার। তিনি বাংলা প্রবন্ধের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করেছিলেন। গুরুতর বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে গিয়েও তিনি থেকে থেকে উইট এবং হিইমারের যে স্বাক্ষর রেখেছেন তা বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্যে বিরল। রসবোধের এই বিষয়টির উৎস কি তাঁর কৃষ্ণনগরে বেড়ে ওঠা, যেখানে ভারতচন্দ্রের মতো রসিক কবির আবির্ভাব হয়েছিল!

যদিও প্রমথ চৌধুরী—যাঁর ছদ্মনাম ‘বীরবল’—এই লেখকের জন্ম বাংলাদেশে, যশোরে এবং পূর্বপুরুষের ভিটে ছিল পাবনা জেলার চাটমোহর এলাকায়, তবে কৃষ্ণনগরেই তাঁর বেড়ে ওঠা।

নিজের ‘আত্মকথা’ নামের রচনায় কৃষ্ণনগর প্রসঙ্গে এর স্বীকারোক্তিও আছে, ‘সেকালে যারা ছোকরা ছিল, তাদের মধ্যে দুজন লেখক বলে স্বীকৃত হয়েছেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায় আর আমি। আমরা দুজনেই কৃষ্ণনাগরিক। আমাদের দুজনেরই লেখায় আর গুণের অভাব থাক—রসিকতার অভাব নেই।’ তিনি একই লেখায় বলেছেন, ‘এজন্য আমি কৃষ্ণনগরের কাছে ঋণী।’

প্রমথ চৌধুরীর গদ্য পড়ার আরেক আনন্দ আছে। তাঁর গদ্যের মধ্যে প্রচুর খোঁচাখুঁচি থাকে। প্রতিপক্ষ ছাড়া যেন তিনি কথাই বলতে পারেন না। প্রতিপক্ষ পেলেই তাঁর মুখে যেন খই ফোটে। এই খোঁচাখুঁচির করতে করতে তীব্র প্রাণ-প্রাচুর্যের মধ্য দিয়ে এগোতে থাকে তাঁর যেকোনো গদ্য, বিশেষত প্রবন্ধ। প্রবন্ধের মধ্যে এই অপর পক্ষের অস্তিত্ব কল্পনা করে তাকে দাবিয়ে, টিটকারি করে নিজের বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি বোধ করি তিনি ঊনবিংশ শতাব্দীর গদ্যকারদের কাছ থেকে নিয়ে থাকবেন।

ঊনবিংশ শতাব্দী ছিল বাঙালির ‘আধুনিক’ হওয়ার সাধনার কাল। যেহেতু বাংলার আধুনিকতা বাইরে থেকে অর্থাৎ ইউরোপ থেকে এসেছে, এ কারণে একে বাগে আনতে, আয়ত্ত করতে কসরত করতে হয়েছে। তখনকার বাঙালির নিজস্ব চেতনা, রুচি, সংস্কৃতি, মূল্যবোধকে পরিবর্তন করে নতুন বাইরের জিনিসকে জীবনে ও চিন্তায় প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে। তাই ঊনবিংশ শতাব্দীর গদ্যের মধ্যে সেই ধস্তাধস্তির চিহ্ন পড়েছে। এই দায়িত্ব যাঁরা নিয়েছিলেন তাঁদের গদ্যে সংগত কারণেই ছিল প্রতিপক্ষ। এই প্রতিপক্ষ আর কেউ নয়, তাঁদেরই স্বজাতির মানুষ, যাঁদেরকে ইংরেজি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত লেখক-সাহিত্যিক-সমাজসংস্কারক শ্রেণিটি পশ্চাৎপদ মনে করতেন। প্রমথ চৌধুরীর সময়টি ঠিক রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩) বা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (১৮২০-১৮৯১) সময় ছিল না। কিন্তু যেহেতু চৌধুরী মশাই নিজেকে প্রাগ্রসর সময়ের প্রতিনিধি মনে করতেন, তাই তিনিও নিজেকে ‘ঝাঁড়ুদার’ জ্ঞান করতেন। জঞ্জাল সাফ করতে হলে কসরত তো করতেই হয়। তা ছাড়া তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। উকিল-ব্যারিস্টারের স্বরূপ তো প্রতিপক্ষের উপস্থিতিতেই ঝলকে ওঠে! লেখার মধ্যে প্রমথ চৌধুরীর ব্যারিস্টারি সত্তার উপস্থিতি তাঁর গদ্যের মধ্যে আলাদা প্রাণ সঞ্চার করেছে বৈকি।

প্রমথ চৌধুরী কম লেখেননি। তাঁর সাহিত্যের বৈচিত্র্যও কম না। চার-ইয়ারী কথা (১৯১৬), আহুতি (১৯১৯), নীললোহিত (১৯৪১) তাঁর গল্পগ্রন্থ। সনেট পঞ্চাশৎ (১৯১৩) এবং পদচারণ (১৯১৯) তাঁর কাব্যগ্রন্থ। কিন্তু প্রমথ চৌধুরী মানেই বাংলাভাষী মানুষ বোঝে প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরীকে। প্রবন্ধে তিনি কী বলেছেন, সাধারণ পাঠক সে জন্যও যে তাঁকে মনে রাখেন বা গুরুত্ব দেন, তা-ও না বোধ হয়। কীভাবে বলেছেন এটিই সম্ভবত প্রমথ চৌধুরীকে অমর করেছে। প্রমথ চৌধুরী নিজেও অবশ্য মনে করতেন যে ‘স্টাইল ইজ দ্য ম্যান’। বাংলা প্রবন্ধ যে এত পরিপাটি, নির্মেদ ও সরস-সপ্রাণ করে লেখা যায়, তিনিই তার প্রমাণ। এ ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথও তাঁর সঙ্গে তুলনীয় নন। কারণ রবীন্দ্রনাথ প্রবন্ধে ছিলেন হৃদয়বাদী আর প্রমথ চৌধুরী বুদ্ধিবাদী।

রবীন্দ্রনাথের মাত্র সাত বছরের ছোট প্রমথ চৌধুরী। কিন্তু চেতনায় দুজন দুই প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। রুচি, চিন্তা, দ্রোহ ইত্যাদিতে তিনি রবীন্দ্রনাথের পরবর্তী প্রজন্মের মানুষ। প্রমথ চৌধুরী রবীন্দ্রনাথের বড় ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের (১৮৪২-১৯২৩) মেয়ে ইন্দিরা দেবীকে (১৮৭৩-১৯৬০) বিয়ে করেছিলেন এ জন্য তিনি পরবর্তী প্রজন্মের তা নয়, তিনি যে চেতনায় রবীন্দ্রনাথের পরের প্রজন্মের ছিলেন সেই স্বাক্ষর তাঁর প্রবন্ধের পরতে পরতে পাওয়া যায়। এ কারণে জীবেন্দ্র সিংহ রায় তাঁর প্রমথ চৌধুরী বইয়ে বলেছেন, ‘সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করলে তাঁকে “রবি-চক্রের” অন্তর্ভুক্ত বলে মনে হয় না।’ বরং তিনি ‘অবতারণা করেছিলেন বীরবলী যুগোর’।

সব মিলিয়ে কথা দাঁড়ালো এই যে প্রমথ চৌধুরী সবুজপত্র সম্পাদনা করে, চলতি গদ্যরীতির প্রবর্তন করে, গদ্যে দৃষ্টিগ্রাহ্য সরসতা এনে, চিন্তায় তারুণ্যের প্রতিষ্ঠা দিয়ে বাংলা সাহিত্যে অনন্য এক স্থান করে নিয়েছেন। ‘বাঙালির বিদূষক’ তিনি, সবুজপত্র পত্রিকার সবুজ ‘বীরবল’। কিন্তু একটি প্রশ্ন তুলতেই হবে, তাঁর এই গদ্য, চিন্তা, স্টাইল প্রকৃতপ্রস্তাবে কতটা গণমুখী? এই প্রশ্নের উত্তরে বলতেই হবে, প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্য বরাবরই অভিজাত। সাধারণের নাগালের এবং উপভোগের প্রায় বাইরের জিনিস। তাঁর সাহিত্য বিদগ্ধজনের বোধের আর উপভোগের খোরাক। কিন্তু সেটি ভিন্ন আলোচনার বিষয়ই বটে। স্থানান্তরে সে আলোচনা চলতেই পারে। এ যাত্রায় জন্মসার্ধশত বর্ষে প্রমথ চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েই শেষ করা যাক।