ইন আ কমপ্লিকেটেড রিলেশনশিপ

অলংকরণ: আরাফাত করিম
অলংকরণ: আরাফাত করিম

সব মেসেজের শব্দই এক। তবু মেসেঞ্জারে টিং করে শব্দটা হতেই শাহিন বুঝল, ঐশী মেসেজ দিয়েছে।

একটু আগে ঐশীকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে এসেছে। ফেরার পথে বাসে পুরোটা পথ ফোনে কথা বলতে হয়েছে। এখন বাসায় ঢুকতে না ঢুকতেই মেসেজ! যে কেউ ভাববে, এ যে বাক বাকুম প্রেম।

আরেকবার টিং করে শব্দ হলো। রিপ্লাই না পেয়ে ঐশীর মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে নিশ্চয়ই। শাহিন পকেটে হাত দিয়ে মোবাইল ধরতেই উত্তাপ টের পেল। কেমন গরম হয়ে আছে! দ্রুত জবাব দেওয়া দরকার।

মেসেজ দেখার সঙ্গে সঙ্গে শাহিনের চোয়াল ঝুলে গেল, ‘রিপ্লাই দিচ্ছিস না ক্যান, শালা?’ সঙ্গে একগাদা লালমুখো রাগের ইমো।

কাল সকালে ঐশীকে নিয়ে পালিয়ে যাবে শাহিন। তার আগের রাতে এর চেয়ে রোমান্টিক মেসেজ আর হতে পারত না!

শাহিন কিছুক্ষণ ভাবল। তারপর গা-ঝাড়া দিয়ে উঠল। এত ভেবে কাজ নেই। ব্যাগ গোছাতে হবে, অনেক কাজ পড়ে আছে। 

ঐশী ব্যাগ গুছিয়েই রেখেছে। নগদ ক্যাশও সরিয়ে রেখেছে। বাপের ক্রেডিট কার্ডটা নেবে না। ক্রেডিট কার্ডে খরচ করলে মুহূর্তেই বাবা টের পেয়ে যাবেন, সে কোথায় আছে। সেখান থেকে কানে ধরে নিয়ে আসবেন। বাবার টিকটিকি সবখানে। ঐশী অত বোকা নয়।

কোথায় যাচ্ছে না যাচ্ছে—এর কোনো প্রমাণ রাখা যাবে না। এমনকি সঙ্গে ফোনটাও নেবে না। এখন খুব সহজে ফোন ট্র্যাক করে খুঁজে বের করা যায়। ঐশীর প্রবল প্রতাপশালী বাবা রাজকন্যাকে খুঁজতে এমন কোনো কাণ্ড নেই করবেন না। প্ল্যানটা এ রকম: ফোন চালু রেখে সেটি পাঠিয়ে দিতে হবে রংপুরে। আর ঐশী ঠিক যাবে উল্টো দিকে। ট্রেনে করে চট্টগ্রাম। সেখান থেকে বাস ধরে বান্দরবান।

আপাতত মায়ের ফোনে কাজ সারছে ঐশী। সবকিছু হিসাব কষে সাজানো। ফুল প্রুফ প্ল্যান। নগদ ক্যাশের পাশাপাশি কয়েক ভরি গয়না সঙ্গে নিচ্ছে। না নিলেও চলত। তবে গয়না নিচ্ছে স্রেফ ঘটনাটিকে আরেকটু নাটকীয় করতে। এমনিতে সোনার প্রতি ঐশীর লোভ নেই। শাহিন অবশ্য লাভ হবে না জেনেও শুরুতে প্রতিবাদ করতে চেয়েছিল। ঐশী রাজ্যের বিরক্তি চোখেমুখে এনে বলেছিল, গাধা, যেটা বুঝবি না, সেটা নিয়ে কথা বলবি না।

শাহিন আসলেই ঐশীকে বোঝে না। তবে এতটুকু বোঝে, ঐশীদের অসুখটা হলো সুখের অসুখ। সুখে থাকে বলেই ভূতে কিলায়।

ভূতে কিলাচ্ছে বলেই ঐশী ঠিক করেছে, বিয়ের দিনেই ভোরবেলা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবে। তার দিক থেকে সবকিছু ঠিকঠাক। ভয় শাহিনটাকে নিয়ে। শাহিন আসলেই একটা ভ্যান্দামারা ছেলে। কথাটা ম্যান্দামারা হবে বোধ হয়। তবে শাহিন ম্যান্দামারারও এক ডিগ্রি ওপরে। ঐশীর ভাষায় ভ্যান্দামারা, মানে একটু বিপদ দেখলেই ভ্যাঁ করে কাঁদতে বসাটাইপ।

শাহিন গড়বড় করে ফেলবে না তো! তাই একটু পরপর খোঁজ নিচ্ছে ঐশী। শাহিন যতই আশ্বস্ত করছে, ঐশীর সন্দেহ বাড়ছে। ছাগলটা অদ্ভুত কারণে তুই থেকে তুমি করে বলা শুরু করেছে। ঐশী আগেও খেয়াল করেছে, অভিভাবকগিরি ফলানোর সময় শাহিন তুমি তুমি করে বলে।

শাহিন মেসেজের রিপ্লাই দিল এতক্ষণে, ‘ইউ একদাম ছেন্তা কারিও না। ডোন্ট ওরি, প্লিজ।’ মুরাদ টাকলা ভাষায় লিখেছে। তুমি না লিখে লিখেছে ইউ। চিন্তা লিখতে লিখেছে সি-এইচ-ই! ওরি বানান লিখল ও-আর-ওয়াই। ডোন্ট লিখেছে ডি-এন-টি! প্লিজ লিখেছে পি-এল-জেড।

ঐশীর বলতে ইচ্ছা করল, ব্যাটা ছাগল! শব্দগুলো লিখতে যে কয়েকটা বর্ণ কম লিখলি, এত সময় বাঁচিয়ে সেই মহামূল্যবান সময় দিয়ে তুই করিসটা কী?

লিখেও ফেলেছিল প্রায় মেসেজটা। পাঠানোর আগে ব্যাক স্পেস চেপে দিল। ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই ঐশী বুঝতে পারছে, ওপাশে শাহিন দরদর করে ঘামছে। শালাকে আরও নার্ভাস করে দিলে বিপদ।

শাহিন আসলেই ঘামছে। বাড়ি থেকে পালানো, তা কি সহজ কথা! জীবনে সে একবারই বাড়ি থেকে পালিয়েছিল। ক্লাস এইটে অঙ্কে ফেল করে। সেই পালানো ছিল পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানের পেছনের বেঞ্চিতে বসে থাকা। তাতেই কেমন বুকটা ধড়াস ধড়াস করছিল।

আর এ তো এমনি এমনি পালানো নয়। রীতিমতো বিয়ের আসর থেকে কনেকে নিয়ে পালানো। যে কনে কালকেও হাসিমুখে গায়েহলুদ করেছে। পারলারে গেছে। মেহেদি দিয়েছে।

শাহিন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে, ঐশী আর রুশাদ যখন বান্দরবানের পাহাড়ে শখের হানিমুন করছে, তখন সে পড়ে আছে কোনো একটা কয়েদখানায়। জেলহাজতে পুলিশের ডান্ডার মার খাচ্ছে। ডান্ডার বদলে আন্ডা, মানে ডিম থেরাপিও হতে পারে।

গল্পে রুশাদ এল কোত্থেকে? এ-ই তো আসল কেস ভাই। ঐশী পালাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু শাহিনের সঙ্গে নয়, রুশাদের সঙ্গে। রুশাদই মূল নায়ক। আর শাহিন সাইড নায়ক। এই গল্পের ‘বাপ্পারাজ’।

গল্পের টুইস্ট এখানেই শেষ নয়।

এমন নয় ঐশীর অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে হয়ে যাচ্ছিল। বিয়েটা রুশাদের সঙ্গেই। তাদের দুই বছরের বেশি সময়ের সম্পর্ক। অবশ্য সেই রিলেশনশিপের স্ট্যাটাস ঘন ঘন বদল হয়েছে। কখনো ‘কমপ্লিকেটেড’, কখনো ‘ইন অ্যান ওপেন রিলেশনশিপ’।

শাহিন অবশ্য সম্পর্কের বড়লোকি ব্যাকরণ বোঝে না। তার মধ্যবিত্ত সরল দর্শন জানে, প্রেম প্রেমই। যেমন ঐশীকে সে সাত বছর ধরে একই রকম প্রগাঢ় ভালোবাসা বেসেছে। রুশাদের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে জেনেও সেই ভালোবাসায় এতটুকু টান পড়েনি। আসলে ঐশীর প্রতি তার ভালোবাসা হচ্ছে ডিমের খোলস-টাইপ ভালোবাসা। ডিমের খোলস জানে, কুসুমটাকে আগলে রাখার জন্যই তাকে দরকার। শেষ ঠিকানা ডাস্টবিনই।

তবে একটা জিনিস শাহিনের মাথায় আসছে না। যে বিয়ে দুই পরিবার মেনে নিচ্ছে, এত ধুমধাম, এত আয়োজন; সেই বিয়ের বর-কনের পালিয়ে যাওয়ার দরকারটা কী?

ঐশীকে সে প্রথমে এ নিয়ে ধরেছিলও, ‘তোমার পালানোর দরকারটা কী?’ ঐশী ঠোঁট উল্টে বলেছিল, ‘তোকে বুঝতে হবে না, ভ্যাবলা।’

শাহিনের ওপর খুব রাগ হয় ঐশীর। পুরুষ মানুষ এমন ভ্যান্দামারা হলে কীভাবে হয়! পুরুষ হবে রূঢ়, রুক্ষ। পুরুষ নারীকে টেনে নিলেও তার মধ্যে কোমলতা থাকবে না। থাকবে খ্যাপামি। বুনো উগ্রতা।

না রে শাহিন, তুই চন্দ্রবিন্দুর গানের মতো, তুমি মায়ের মতো ভালো! তোর সঙ্গে কীভাবে প্রেম করব বল! তোর ভালোবাসায় পাগলামি নেই। যত্ন আছে, অবহেলা নেই। আদর আছে, রাগ নেই। অ্যাডভেঞ্চার নেই। সবকিছুতে এত ভয় পাইস ক্যান? ডেয়ারিং হইতে হয়, বুঝলি। জীবনে করছিস সাহসী কোনো কিছু? তোর সঙ্গে সংসার করলে তো ঘরের তেলাপোকাও আমাকেই মারাতে হবে। ভিতুর ডিম একটা।

আর রুশাদ? ঠিক এর উল্টো। তার ভালোবাসায় অবহেলা আছে। অবজ্ঞা আছে। রুশাদের ভালোবাসা হলো ‘বিটউইন পেইন অ্যান্ড প্লেজার’। ঐশী বোধ হয় একটু সেডোমেসোকিস্টিক!

ঐশী জানে, এ-সম্পর্কের প্রতি রুশাদ শতভাগ সৎ নয়। ঐশীর ক্ষীণ সন্দেহ, বিয়ের আগের রাতেও সে আনিকা বা নাবিলার সঙ্গে রাত কাটাবে। হয়তো বিয়ের পরেও। রুশাদের অসংখ্য বান্ধবীর পাঠানো একাধিক স্ক্রিনশট সেভ করে রাখা আছে ঐশীর মোবাইলের ফটো গ্যালারিতে। প্রতিটি স্ক্রিনশটে রুশাদের প্রতারণার সচিত্র ইতিহাস। অনেক ভেবে ঐশী বের করেছে, রুশাদের জন্য সবচেয়ে বড় শাস্তি হবে ওকে বিয়ে করে ফেলা। যদিও ঐশী জানে, বিয়েটা হয়তো বেশি দিন টিকবে না।

রুশাদ নিজেও এই বিয়ে বিয়ে খেলাটা বেশ উপভোগ করছে। যদিও সে শরীরের কারবারি, মনের নয়। তবে ব্যাপারটা বেশ অ্যাডভেঞ্চারাস হবে সন্দেহ নেই।

বিয়ের সব আয়োজন যখন প্রায় সম্পন্ন, সেই মুহূর্তে ঐশীই বলেছিল, ‘ধ্যাত, এভাবে বিয়ে করে কোনো মজা আছে? চলো, আমরা পালিয়ে বিয়ে করি।’ কথাটা রুশাদ লুফে নিয়েছিল সঙ্গে সঙ্গে।

শাহিনেরা প্রতিমুহূর্তে অনিশ্চয়তার সঙ্গে লড়াই করে। ঐশী-রুশাদদের জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত এত নিশ্চয়তায় ঠাসা, হাঁপ ধরে যায়। অনিশ্চয়তাই তো জীবনের একমাত্র রোমাঞ্চ! ঐশীর একটাই আফসোস, বিয়ের ছবিতে হয়তো তেমন লাইক পড়বে না।

এই একটা আফসোস নিয়ে ঐশী ঘুমাতে গেল। কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খেয়ে।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, দপ করে ঐশীর যাবতীয় উত্তেজনা যেন নিভে গেল। আশ্চর্য, একটু আগেও ভোরে পালাবে বলে রোমাঞ্চ হচ্ছিল তার। কে জানে, তীব্র উত্তেজনার পর অবসাদ গ্রাস করে। এখন হয়তো তা-ই হচ্ছে ঐশীর। কাল ভোরে ঠিকমতো চট্টগ্রামের ট্রেনে চেপে বসলেই হয়। সেখান থেকে সোজা বান্দরবান! 

ঐশী ঘুমাচ্ছে। রুশাদ হয়তো আনিকার ফ্ল্যাটে ঘুম ঘুম খেলছে। পুরো ঘটনায় যার ভূমিকা সামান্য, শুধু তার ঘুম নেই। ঐশীর ফোনটা নিয়েই কাল শাহিনের রংপুরে যাওয়ার কথা, সঙ্গে রুশাদের ফোনটাও। ঐশীর সিংহ-বাবাকে ভুল দিকে টেনে নেওয়ার জন্য সে-ই টোপ বসানো ছাগল।

ঘুম আসছে না দেখে ঐশীর মোবাইল নিয়ে টেপাটেপি করছে শাহিন। আইফোন টেন। টিপতেও ভয় লাগে। পাছে ফোনটা ব্যথা পেয়ে যায়!

ছবির গ্যালারিতে ঢুকেছে শাহিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনের বন্ধুর সঙ্গে ক্যামেরাবন্দী হয়ে থাকা আনন্দের স্মৃতিগুলো দেখার জন্য হয়তো। কিন্তু শাহিন অবাক হয়ে আবিষ্কার করল, ঐশীর ফটো গ্যালারিতে শুধুই বিষাদ! সেভ করে রাখা অসংখ্য স্ক্রিনশটই শুধু পড়ে গেল শাহিন। সারা রাত তার নির্ঘুম কাটল। 

ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। ঐশীকে সাত বছরের দেখায় এই প্রথম অসহায় অসহায় লাগছে শাহিনের কাছে। প্রবল আত্মবিশ্বাসী, প্রবল সাহসী ঐশী কেমন যেন ভয় পেয়ে গেছে। ভীরু হরিণীর চোখে তাকাচ্ছে। ট্রেনটা এখনো গতি পায়নি। কয়েকবার হুইসেল বাজিয়ে ভোঁস ভোঁস করছে, ছুট লাগানোর অপেক্ষায় থাকা খ্যাপা ষাঁড়ের মতো।

গতি বাড়ল। ঐশী শেষবারের মতো প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকাল। না, রুশাদ আসেনি!

অসহায় চোখে সে তাকাল শাহিনের দিকে। চিরকালের ক্যাবলাকান্ত শাহিনের চোখে কী আশ্চর্য স্থিরতা। এই প্রথম ঐশী আবিষ্কার করল, শাহিনের বোকা বোকা চাহনির আড়ালে গভীর দৃষ্টি আছে, শান্ত একটা দিঘির মতো।

ট্রেন ছুটে গেল চট্টগ্রামের দিকে। বিয়েটা আজকেই হবে। শাহিন ঠিক জানে। সে সবকিছু গুছিয়ে রেখেছে।

প্রথমেই যেটা করেছে, গভীর রাতে আনিকার ফ্ল্যাটে হাজির হয়ে আধনেংটো ঘর্মাক্ত-ক্লান্ত রুশাদকে টেনে বের করে তুলে দিয়েছে রংপুরের বাসে। রুশাদকে বলেছে, ঐশীর বাবা শেষ মুহূর্তে সব জেনে যাওয়ায় প্ল্যান বদল। তার চোখে ধুলো দিতে যেতে হবে উল্টো দিকে। বিয়েটা হবে রংপুরেই।

হকচকিত রুশাদ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে তুলে দিয়েছে রংপুরগামী এসি বাসে। বলেছে, ভোররাতে ঐশী বাসা থেকে বেরোলে তাকে নিয়ে সে গাড়িতে করে আসছে। রুশাদকে অভয় দিয়ে বলেছে, ‘রংপুরে সব সেট করে রাখা আছে। সমস্যা নেই। আর শোনেন, আপনার ফোনটা আমার কাছে থাকল, আমার ফোনেই যোগাযোগ হবে। ।’

সকালে এক দোকানের টিঅ্যান্ডটি থেকে ফোন দিয়েছে ঐশীর বাবাকে, ‘আপনার মেয়ে তো সর্বনাশ করতে চলেছে। রুশাদকে বাদ দিয়ে শাহিন নামের একটা ভ্যাগাবন্ড-টাইপের ছেলেকে বিয়ে করবে বলে পালিয়েছে। দুজনই এখন রংপুরের পথে। শিগগিরই খোঁজ লাগান। জি জি, ঠিক বলছেন, আপনার মেয়ের ক্লাসমেট ছিল যে, ওই ফকিন্নি-টাইপ ছেলেটাই।’ করো এবার শাহিনের মোবাইল ট্র্যাক! 

সকালের মিষ্টি রোদমাখা স্নিগ্ধ বাতাস ট্রেনের জানলা দিয়ে এসে ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে ঐশীকে।

শাহিন মনে মনে বলল, আমি সূর্যটাকেও ঈর্ষা করি, রোদের অজুহাতে যে তোমাকে ছুঁয়ে দেয় রোজ। মনে মনে বলল, জানি না ঐশী, আমাকে বিয়ে করে তুই সুখী হবি কি না। কিন্তু তোকে অসুখী হতে আমি দেব না। কথা দিলাম।

কী আশ্চর্য, হবু বউকে কেউ তুই-তোকারি করে!

ঐশী মনে হয় ঘটনার আকস্মিকতা সব সামলে নিয়েছে। রোদের তেজ বেড়েছে বলে ওড়নাটা মাথায় ঘোমটার মতো করে দেওয়া। বউ বউ লাগছে। নাশতার প্যাকেট খুলতে খুলতে স্নেহের সুরে ঐশী বলল, ‘কী ব্যাপার, তুমি নাশতা করবে না!’

সাত বছরের পরিচয়ে এই প্রথম ঐশী তাকে তুমি করে বলল।