ঘোড়বট

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

রাজা মশাইয়ের মন ভীষণ খারাপ। তার প্রিয় ঘোড়াটা চুরি হয়ে গেছে। রাজ্যের কেউ কেউ বলছে, মাঝরাত্তিতে তারা নাকি ঘোড়াটাকে উড়ে যেতে দেখেছে। যাহ্, গুল মারার জায়গা পায় না! ঘোড়া কি কখনো উড়তে পারে? আহ্, কী সুন্দর ঘোড়াটাই না ছিল! সেই যেদিন রাজকন্যা সিতারার জন্ম হয়, পুকুরের পারে রাজার সঙ্গে ঘোড়াটির প্রথম দেখা। রাজা ঘোড়াটিকে খুব ভালোবাসতেন। ভেবেছিলেন মেয়ে সিতারার যখন ১৪ বছর পূর্ণ হবে, তখন জন্মদিনে এই ঘোড়াটি উপহার হিসেবে দেবেন। সিতারার ১৪ বছর পূর্ণ হতে আর মাত্র এক মাস বাকি। এর মধ্যে ঘোড়া উধাও! রাজা তাঁর পুরো রাজ্যে সৈনিক ছড়িয়ে দিলেন। এক মাসের মধ্যে তাঁর ঘোড়া চাই-ই চাই!
হঠাৎ রাজ্যে প্যান্ট-শার্ট পরা এক লোক উপস্থিত হলো। রাজাসহ সবাই তাকে দেখে অবাক! এমন পোশাক তাঁরা আগে কখনো দেখেননি! কে এই লোক?
লোকটি সবার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল, ‘আরে! আমাকে দেখে অবাক হবেন না প্লিজ! আমি ভবিষ্যৎ থেকে এসেছি! আসলে কয়েক বছর আগে এখানে এসেছিলাম। ভুল করে আমার টাইম মেশিনে চড়ে এক ঘোড়বট, মানে ঘোড়া-রোবট এসে গেছে! সেবার মেশিনে একটা গন্ডগোল হওয়ায় আমি ঘোড়বটটা ফেলেই চলে গিয়েছিলাম। আমি কি ওকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারি?’
রাজা তো ভীষণ অবাক! এই ‘প্লিজ’, ‘টাইম মেশিন’, ‘ঘোড়বট’...এসবের মানে কী! রাজার ভীষণ রাগ হলো। একে তো ঘোড়া খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তার ওপর আরেক ঝামেলা।
মন্ত্রী বললেন, ‘আপনার ঘোড়া কি উড়তে পারে? আর আপনি ভবিষ্যৎ থেকে এলেনই বা কীভাবে?’
‘সরি। এগুলো বোঝানো আমার পক্ষে মুশকিল। আপনি শুধু বলেন ঘোড়াটি কোথায়। আমি গিয়ে নিয়ে আসছি...।’
লোকটির কথা শেষ হতে না হতেই হঠাৎ কোথা থেকে ঘোড়ার আওয়াজ শোনা গেল। এরপর যা হলো, তা দেখে রাজ্যের সবার চক্ষু চড়কগাছ! একমাত্র সেই অদ্ভুত লোকটি হাসি হাসি মুখ করে দাঁড়িয়ে রইল।
কোথা থেকে রাজার ঘোড়া আশ্চর্যজনকভাবে উড়তে উড়তে লোকটির সামনে এসে দাড়াল। লোকটি ঘোড়াটাকে আদর করতে করতে বলল, ‘আমাদের সোনা, জাদু! চলো তোমার আসল দুনিয়ায়। এটা অতীত। এখানে তোমার কোনো কাজ নেই!’
রাজা লোকটিকে বাধা দিতে না দিতেই হঠাৎ কেমন জোরালো একটা আওয়াজ হলো। লোকটা ও ঘোড়া ঘুরতে ঘুরতে একসময় উধাও হয়ে গেল!
সপ্তম শ্রেণি, মডেল একাডেমি, ঢাকা