সিলেটের ডিআইজির সাক্ষাৎকার
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইউপি নির্বাচনের আগে-পরে পুলিশ সক্রিয় থাকবে
নির্বাচন কমিশন সারা দেশে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে এবং ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে সিলেট বিভাগের চার জেলা সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ৪৪টি ইউপিতে এবং তৃতীয় ধাপে ৭৭টি ইউপিতে ভোট হবে। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের উৎসাহ যেমন বেশি, তেমনই প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনাও বেশি ঘটে। নির্বাচনপূর্ব ও পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে সিলেট রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদের সঙ্গে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: সারা দেশে ইউপি পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে সিলেটের ইউপি নির্বাচন নিয়ে আপনাদের প্রস্তুতি কেমন?
মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ: সিলেটে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, সে জন্য বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অফিসার-ফোর্সদের যথাযথ দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনের বিষয়ে প্রার্থীদের নিয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও নির্বাচন অফিসের সমন্বয়ে মিটিং করা হবে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: ইউপি নির্বাচনে বরাবরই প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে। স্থানীয় নির্বাচন হওয়ায় এ নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদেরও উৎসাহ-উদ্দীপনা বেশি থাকে। এমনকি নির্বাচন ঘিরে এলাকা ও গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতও তখন মাথাচাড়া দেয়। এ বিষয়ে আপনাদের ভাবনাচিন্তা কী?
মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ: দেশের অন্যান্য এলাকার মতো সিলেট বিভাগের জনগণও ইউপি নির্বাচন নিয়ে অত্যন্ত আগ্রহী। তাঁদের মধ্যে দলমত-নির্বিশেষে সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। তার পরও নির্বাচনে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য আমরা পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: অতীতে দেখা গেছে, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সিলেট সদরের জালালাবাদ ইউপিতে গত শনিবার প্রার্থীর সমর্থককে খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আপনাদের বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ: এ রকম ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। আগামী নির্বাচনে যাতে এ রকম ঘটনা না ঘটে, সে জন্য কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে স্থানীয় সুধী সমাজকে সম্পৃক্ত করে আইনশৃঙ্খলা–বিষয়ক ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। প্রতিটি ইউপিতে কনফিডেন্স বিল্ডিং প্যাট্রলের মাধ্যমে সব ভোটারদের শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অবগত ও সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: নির্বাচনপূর্ব ও পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আপনারা কেমন উদ্যোগ নেবেন?
মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ: সব প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও থানা-পুলিশের মাধ্যমে ব্যাপক কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইজিপি স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে যাতে কোনো সহিংসতার অবতারণা না হয়, সে বিষয়ে নির্বাচনের পরও পুলিশি ডিউটি অব্যাহত রাখা হবে। এককথায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইউপি নির্বাচনের আগে-পরে পুলিশ সক্রিয় থাকবে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ: প্রথম আলোর পাঠকদেরও ধন্যবাদ।