অবরোধে দরিদ্র রোগীদের দুর্ভোগ

টানা অবরোধের কারণে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দরিদ্র রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংকটাপন্ন রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের ছাড়পত্র দেওয়া হলেও অবরোধের কারণে তাঁরা সময়মতো চিকিৎসা নিতে পারছেন না।
উপজেলার জাফরপুর গ্রামের জাইরন বেগম ও শেফালী খাতুন চার দিন বয়সী এক শিশুসন্তানের চিকিৎসা করাতে গত মঙ্গলবার সকালে ফুলবাড়ীতে আসেন। চিকিৎসক ওই শিশুটিকে দ্রুত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু সড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় কীভাবে শিশুর চিকিৎসা করাবেন, এ নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এদিকে শিশুটির মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন।
গতকাল বুধবার উর্বশী প্রেক্ষাগৃহের পূর্বপাশে নিউ বুক সেন্টার নামের এক দোকানের সামনে বসে তাঁদের কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।
শিশুটির খালা জাইরন বেগম বলেন, ‘জন্মের পর থেকে শিশুটি একবারও কাঁদেনি। মায়ের দুধও খাচে না, শরীর নিস্তেজ হয়া যাচে। ডাক্তার এক্ষুণি দিনাজপুরোত নিয়ে যাবার কইচে। শিশুর বাপ রিকশাভ্যান চালায়। কেংকা করি (কেমন করে) অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিবি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা বলেন, সাধারণত অল্প আয়ের রোগীরা হাসপাতালেই চিকিৎসা নিতে আসেন। প্রতিদিন অন্তত পাঁচ-সাতজন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর ও রংপুরে পাঠানো হয়। অধিকাংশ রোগীর অ্যাম্বুলেন্সে যাওয়ার মতো সামর্থ্য থাকে না। টানা অবরোধের কারণে ওইসব রোগী চরম বিপদে পড়েছেন।
ফুলবাড়ী শহরের বেসরকারি সংস্থা টিএম হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ইমদাদ-সিতারা খান কিডনি সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক রাজু আহমেঞ্চদ প্রথম আলোকে বলেন, জয়পুরহাটের লিনা সুলতানা ও পাঁচবিবি উপজেলার সানোয়ার হোসেনের দুটি কিডনিই নষ্ট। তাঁরা এখানে সপ্তাহে অন্তত দুবার ডায়ালাইসিস করেন। টানা অবরোধের কারণে তাঁরা সেন্টারে আসতে পারছেন না।