নীলফামারীর মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে অবেদনবিদ না থাকায় প্রায় দেড় বছর ধরে প্রসূতিদের জরুরি অস্ত্রোপচার (সিজার) বন্ধ রয়েছে। এতে গরিব প্রসূতি রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ওই মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, অবেদনবিদ মো. ফারুক আজম নূর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকে এখানে অবেদনবিদের অভাবে প্রসবজনিত অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত অন্যান্য অস্ত্রোপচার চলছে।
ওই কেন্দ্রের সেবা গ্রহণকারী কয়েকজন প্রসূতি রোগী বলেন, এখানে স্বাভাবিক প্রসব না হলে নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতাল বা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন এই কেন্দ্রের চিকিৎসক। কিন্তু রাতে নীলফামারী সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় না। এ কারণে কোনো রোগীর রাতে প্রসব ব্যথা শুরু হলে তাঁকে রংপুর নেওয়া খুবই কষ্ট হয়। তাই বাধ্য হয়ে রোগীকে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে যেতে হয়। আর তখন ক্লিনিকের ব্যয়ভার বহন করতে গরিব রোগীর পরিবারকে অনেক কষ্ট করতে হয়।
গত সোমবার জলঢাকার খুটামারা ইউনিয়নের পূর্ব খুটামারা গ্রামের কালীপদ রায় (৪০) তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী আলো রানী রায়কে নিয়ে এ কেন্দ্রে আসেন। কিন্তু অবেদনবিদ না থাকায় তাঁকে যেতে হয় স্থানীয় একটি ক্লিনিকে। তিনি বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে একটু হয়রানি হলেও খরচ কম, কিন্তু ক্লিনিকে খরচ বেশি। বাধ্য হয়ে রোগীর কথা বিবেচনা করে তাঁকে ক্লিনিকে নিতে হয়।’
নীলফামারী মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা রোকসানা বেগম বলেন, ‘এখন এখানে নর্মাল ডেলিভারি (সাধারণ প্রসব) হচ্ছে। গত মাসে ৬৭টি সাধারণ প্রসব করা হয়েছে। জন্ম বিরতিকরণ, বন্ধ্যাকরণসহ পরিবার পরিকল্পনাসংক্রান্ত অন্যান্য অস্ত্রোপচার আমি নিজেই করছি। কিন্তু অবেদনবিদ না থাকায় প্রসূতির অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না। রোগীর অবস্থা দেখে তাঁদের নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতাল বা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দিচ্ছি।’
নীলফামারী পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক আফরোজা বেগম বলেন, ‘ওই মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে অবেদনবিদ না থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে যতদূর জেনেছি, নতুন চিকিৎসক নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি শিগগিরই ওই কেন্দ্রের অবেদনবিদের সমস্যা দূর হবে।’