আইনের শাসনের ব্যর্থতায় ঘটছে বিস্ফোরণের ঘটনা

ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)
ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার কারণে অগ্নিকাণ্ড, বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো ঘটছে বলে মনে করেন নগর–পরিকল্পনাবিদেরা। তাঁরা বলছেন, সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। এর অবর্ণনীয় ক্ষতি রাষ্ট্র তথা সাধারণ জনগণের ওপর ভয়ংকরভাবে নেমে এসেছে।

আজ মঙ্গলবার ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়। আইপিডি মনে করে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড, বিস্ফোরণ, জীবন ও জীবিকার ক্ষতির পেছনে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের যেমন দায় আছে, তেমনি ডিপোর তদারকি, ব্যবস্থাপনা ও নজরদারির দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার দায়ও আছে।

পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, নিমতলী, চুড়িহাট্টা, রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস ফ্যাক্টরির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলোর প্রতিরোধ ও রাসায়নিক দ্রব্যাদির নিরাপদ ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে করণীয় নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ও দপ্তরগুলোর দায়দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয়, ওই সরকারি সংস্থাগুলো কর্তৃক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায়নি।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ডিপোতে আগুন ও পরবর্তী বিস্ফোরণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে আইপিডি বলছে, এ ঘটনায় বিস্ফোরক অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর, শ্রম অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, স্থানীয় প্রশাসন—সবারই দায়িত্ব পালনে গাফিলতির বিষয়টি আবারও সামনে উঠে এসেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আইপিডির নির্বাহী পরিচালক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া শিল্পকারখানা ও রাসায়নিক গুদাম-ডিপোগুলোতে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ভবন, কমপ্লেক্স, ইমারত তৈরি করা হচ্ছে। এসব স্থাপনায় ইমারতসংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা, ব্যবহারকালীন নিরাপত্তা, অগ্নিনিরাপত্তা ও দুর্যোগকালীন প্রস্তুতির বিরাট ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে।

আইপিডি বলছে, কাস্টমস সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিরাপত্তা ও যন্ত্রপাতির শর্ত পূরণ না করায় ২০১৭ সালে বিএম কনটেইনার ডিপোর লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ রাখা হয়েছিল। ডিপোতে ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ থাকার বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস জানত না। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার চরমতর দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ।