আইন তৈরি একটি লম্বা প্রক্রিয়া: শিক্ষা আইন নিয়ে মন্ত্রী
এক দশকের বেশি সময় ধরে আলোচনায় থাকা শিক্ষা আইন কবে চূড়ান্ত হবে, তা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। জবাবে এই আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি তুলে ধরে তিনি বলেছেন, আইন তৈরি একটি লম্বা প্রক্রিয়া।
২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি হওয়ার পরের বছর থেকে শিক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তখন থেকে এই চূড়ান্ত হচ্ছে, তো আবার পিছিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, মূলত নোট-গাইড বা সহায়ক বই এবং কোচিং-প্রাইভেটের মতো কিছু বিষয় রাখা না-রাখা নিয়েই আইনের খসড়াটি এত দীর্ঘ বছর ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তর লেখালেখিও হয়েছে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার তথ্য জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে জানতে চান শিক্ষামন্ত্রীর কাছে। জবাবে দীপু মনি বলেন, আইন তৈরি একটি লম্বা প্রক্রিয়া। তবে তাদের (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) যেটুকু কাজ করার ছিল সেই কাজ চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এরপর আইন প্রণয়নের যে প্রক্রিয়া সেটি আর তাঁদের হাতে নেই।
দীপু মনি বলেন, খসড়াটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন করলে চূড়ান্ত ভেটিংয়ের জন্য হয়তো আবার আইন মন্ত্রণালয়ে যেতে পারে কিংবা মন্ত্রিসভা কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনও দিয়ে দিতে পারে। কোনটি হবে, তা তাঁরা জানেন না। যখন মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন হবে তারপরে এটি সংসদে যাবে। সংসদে উপস্থাপিত হলে আবার সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে যাবে। স্থায়ী কমিটি পাস করলে আবার সংসদে উপস্থাপন হবে। তবে সেটি পাস হবে কি না সেটি সংসদের এখতিয়ারের বিষয়।
‘টিআইবির রিপোর্ট এখন প্রযোজ্য নয়’
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্ট্যারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়। তাতে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষসহ কিছু পদের নিয়োগে ঘুষ দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজে অনিয়মের তথ্য তুলে ধরা হয়।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, টিআইবির পুরো রিপোর্ট তাঁরা দেখেছেন। তাতে অনেক অসংগতি আছে। এখন সরকারি শিক্ষক নিয়োগ হয় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে। আর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ হয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন প্রত্যয়ন কতৃর্পক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে। শুধুমাত্র প্রধানশিক্ষক কিংবা দু-একটি পদে... (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হয়) তাও আবার গ্রন্থাগারিক নিয়োগও এনটিআরসিএর মাধ্যমে হবে। কাজেই টিআইবি যে কথাগুলো বলেছে তা এখন আর প্রযোজ্য নয়। ওনাদের পর্যবেক্ষণগুলোর বিষয়ে বহু আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে গেছে। তাই তাদের প্রতিবেদনের খুব মূল্য আছে বলে তিনি মনে করেন না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তবে কেউ দুর্নীতির বিষয় খতিয়ে দেখলে আমাদের জন্য ভালো। এতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অনেক বেশি সহজ হয়। কাজেই কেউ দেখছে, তা ভালো কথা। কিন্তু দেখার চোখটা ঠিক থাকতে হবে। সেটা নিরপেক্ষভাবে ও বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে এবং বর্তমানের অবস্থার যেন প্রতিফলন ঘটে।’
যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে সরকারের নিয়ম-কানুন অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।