ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন তিমির নন্দী: ছবি প্রথম আলো
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন তিমির নন্দী: ছবি প্রথম আলো

রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী আবদুল জব্বারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পীরা। দ্রুত দেশের বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো না গেলে গুণী এই শিল্পীর জীবন সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

আবদুল জব্বারের চিকিৎসা সহায়তার জন্য ‘কণ্ঠশিল্পী মো. আবদুল জব্বার চিকিৎসা সহায়তা কমিটির’ ব্যানারে আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়। শিল্পীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কমিটির আহ্বায়ক তিমির নন্দী ও সদস্য ইন্দ্রমোহন রাজবংশী।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হারমোনিয়াম কাঁধে নিয়ে কলকাতায় বাংলাদেশি শিবির ও মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পগুলোতে গান শুনিয়ে তাঁদের উজ্জীবিত করেছেন আবদুল জব্বার। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় গান করে ওই সময়ে ১২ লাখ রুপি তহবিল সংগ্রহ করে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। আজ এ সময়ে দেশের স্বার্থে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা খুবই প্রয়োজন।

শিল্পী আবদুল জব্বার
শিল্পী আবদুল জব্বার

তিমির নন্দী বলেন, ‘সংকটাপন্ন অবস্থায় দেশের বাইরে চিকিৎসা করতে গেলে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। এত টাকা তাঁর (আবদুল জব্বার) পরিবারের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, তাঁকে অতি দ্রুত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতি আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আবদুল জব্বারের জন্য অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমামকে উপদেষ্টা করে এবং শিল্পী তিমির নন্দীকে আহ্বায়ক ও গীতিকার আলী আশরাফ আখন্দকে সদস্যসচিব করে ‘কণ্ঠশিল্পী মো. আবদুল জব্বার চিকিৎসা সহায়তা কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। এ ব্যানারে শিল্পকলা একাডেমিসহ রাজধানীর উত্তরা, বনানী, পুরান ঢাকায় দর্শনীর বিনিময়ে চ্যারিটি শোর আয়োজন করা হবে।

‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘তুমি কি দেখছ কভু জীবনের পরাজয়’সহ ছয় হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন আবদুল জব্বার। তিনি বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), একুশে পদক (১৯৮০) ও স্বাধীনতা পদকে (১৯৯৬) ভূষিত হয়েছেন।

আবদুল জব্বার ১৯৩৮ সালে ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাইতে শুরু করেন। ১৯৬২ সালে তিনি প্রথম চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভিতে (তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশন) নিয়মিত গান গাইতে শুরু করেন।