আলুখেতে লেটব্লাইটের আক্রমণ

বগুড়ার কাহালু ও দুপচাঁচিয়া উপজেলায় কয়েক দিন আগের বৃষ্টি ও টানা ঘন কুয়াশায় আলুখেতে লেটব্লাইট রোগ আর সরিষাগাছে ম্যালাইন নামের পোকা দেখা দিয়েছে। এতে এই দুই উপজেলায় আলু ও সরিষার উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোপা আমন ধানের উৎপাদন খরচ পর্যন্ত ওঠাতে না পেরে এবার এই এলাকার কৃষকেরা আলু ও সরিষা আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন।

কাহালুর কালাই কর্ণিপাড়া গ্রামের কৃষক মোকলেছার রহমান বলেন, ‘এবার ধানের দামে কৃষকেরা হতাশ। আশা নিয়ে আলু-সরিষার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন তাঁরা। এক সপ্তাহ আগে দুই দিন বৃষ্টি আর ঘন কুয়াশায় আলুগাছে লেটব্লাইট (পাতা মোড়ানো) রোগ ধরেছে। গাছের পাতা কুঁকড়ি হয়ে শুকিয়ে গাছ মরে যাচ্ছে। রোদ না উঠলে আলুগাছ নষ্ট হয়ে যাবে। ফলন অর্ধেকে নেমে যাবে।’ একই কথা বলেন একই এলাকার বীরকেদার গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদ, সরদারপাড়া গ্রামের আত্তাব আলী, রেজাউল ইসলাম।

দুপচাঁচিয়ার জিয়ানগরের খলিশ্বর গ্রামের আবুবক্কর ছিদ্দিক বলেন, শুরু থেকে আবহাওয়া ভালো থাকায় আলু ও সরিষাগাছ ভালো হয়েছিল। আলুর দাম তখন বেশি ছিল। লাভের আশায় অনেক কৃষক ১২০ দিনের আলু ৯০ দিনের মাথায় তুলে বিক্রি করে দিয়েছেন।

কাহালু কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৮ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে আলু ও ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে সরিষা লাগিয়েছেন কৃষকেরা। আর দুপচাঁচিয়ায় ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু ও ৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা লাগিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব এলাকায় কার্ডিনাল, ডায়মন্ড ও পাকড়ি জাতের আলু লাগিয়েছেন কৃষকেরা।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে আলুখেত যত না ক্ষতি হয়েছে, তার চেয়ে টানা ঘন কুয়াশায় লেটব্লাইট রোগে বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রবিশস্যে এখন রোদ দরকার। আবার সরিষাগাছে ম্যালাইন নামের জাত পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে সরিষাগাছের পাতা পোড়ার মতো হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আলুগাছ রোগবালাইয়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য রেডিমিলগোল্ড (ম্যানকোজেব ও মেটালেক্সিল-মিশ্রিত) ওষুধ ব্যবহার করতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিন-চার দিন পরপর এই ওষুধ দিতে হবে। তবে রোদ হলে আর ওষুধের প্রয়োজন হবে না। আমরা প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে গিয়ে লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।’