আসামিরা স্বেচ্ছায় এ জবানবন্দি দিয়েছে, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

হাইকোর্ট বলেছেন, মেয়েটি ফিরে আসায় আসামিদের দেওয়া জবানন্দির বক্তব্য সঠিক নয়, যা বাস্তবতা। ফাঁসি হতে পারে জেনেও আসামিরা কি স্বেচ্ছায় এ ধরনের জবানবন্দি দিতে পারে—এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? জবানবন্দিতে আসামিরা মেয়েটিকে হত্যা করার কথা কি শখ করে বলেছে?
নারায়ণগঞ্জে ‘মৃত’ কিশোরীর জীবিত ফিরে আসার প্রেক্ষাপটে বিচারিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনের ওপর শুনানিতে আজ বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই প্রশ্ন রাখেন। আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন আদালত।

এর আগে ৫ জানুয়ারি বিচারিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেদিন আদালত ১৩ জানুয়ারি শুনানির দিন রাখেন। নারায়ণগঞ্জে ‘মৃত’ কিশোরীর জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় বিচারিক অনুসন্ধানে তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আল মামুনের বিরুদ্ধে আসামিদের মারধর, ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করার প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। আজ আদালতে মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শামীম আল মামুনের পক্ষে আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী শুনানি করেন। শুনানিকালে শামীমের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত ওই কথা বলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন এবং আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির শুনানি করেন।

গত বছরের ৪ জুলাই ১৫ বছর বয়সের এক কিশোরী নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকজন তাকে না পেয়ে থানায় প্রথমে জিডি ও পরে মামলা করে। ওই মামলায় পুলিশ আবদুল্লাহ, রকিব ও খলিলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা ‘স্বীকার করে’ গত ৯ আগস্ট আদালতে জবানবন্দি দেন। তবে ‘অবিশ্বাস্যভাবে’ ঘটনার ৫১ দিন পর গত ২৩ আগস্ট ওই কিশোরী ফিরে আসে। পরে সে জানায়, এক যুবককে বিয়ে করে বন্দর এলাকার ভাড়া বাড়িতে সংসার করছে সে। আদালত পরে ওই কিশোরীকে তার পরিবারের জিম্মায় দেন।

ওই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে মেয়েটির বাবার করা মামলার নথিপত্র তলব ও তা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী হাইকোর্টে আবেদন (রিভিশন) করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ আসামিদের গ্রেপ্তার, রিমান্ড, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড এবং কথিত ধর্ষণের শিকার ও নিহত ভুক্তভোগীর জীবিত থাকাসহ সার্বিক বিষয়ে বিচারিক অনুসন্ধান করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন।