বাংলা সাহিত্যের যশস্বী লেখক ও চিন্তক আহমদ ছফা ছিলেন চিরকুমার। জীবিতকালে নিজের কোনো রচনার কপিরাইট নিবন্ধন করেননি তিনি। মৃত্যুর পর তাঁর বইয়ের কপিরাইট নিয়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ বিরোধ। অবশেষে কপিরাইট বোর্ডের এক যুগান্তকারী রায়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ওই বিরোধের।
আহমদ ছফার রচনাবলি আর প্রকাশ করতে পারবে না ঢাকার বাংলাবাজারের হাওলাদার প্রকাশনী। এই প্রকাশনীর অনুকূলে থাকা আহমদ ছফার ১০টি বইয়ের কপিরাইট বাতিল করে এমন আদেশ দিয়েছেন কপিরাইট বোর্ড। একই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে আহমদ ছফা রচনাবলি প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
গত ৪ এপ্রিল হাওলাদার প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মো. মাকসুদের আপিলের নিষ্পত্তি করে কপিরাইট বোর্ড এ আদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ২৪ মার্চ ‘লেখক আহমদ ছফা রচনাবলির কপিরাইট: নূরুল আনোয়ার বনাম মো. মাকসুদ, স্বত্বাধিকারী হাওলাদার প্রকাশনী’ অভিযোগের রায় ঘোষণা করেন কপিরাইট নিবন্ধক। ওই আদেশে অসন্তুষ্ট হয়ে মো. মাকসুদ ওই বছরের ২০ জুলাই কপিরাইট বোর্ডে আপিল দায়ের করেন।
আদেশে কপিরাইট নিবন্ধক নিরপেক্ষ কমিটির তিনটি কাজের কথা উল্লেখ করেছেন। ১. প্রকাশক নির্বাচন ও রচনা প্রকাশের অনুমতিসংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদন ২. রয়্যালটির হার নির্ধারণ ও প্রকাশকের কাছ থেকে তা সংগ্রহ ৩. প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তদারকি এবং প্রাপ্ত রয়্যালটি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে প্রাপ্যতা অনুযায়ী বণ্টন। আপিল বোর্ড কমিটির ৪ নম্বর কাজ সংযুক্ত করেছেন। তা হলো মরহুম আহমদ ছফার স্মৃতি ও রচিত গ্রন্থাবলি সংরক্ষণের উদ্দেশে আহমদ ছফা ট্রাস্ট গঠন।
আহমদ ছফার ওই ১০টি বই হলো ‘পুষ্পবৃক্ষ ও বৃহঙ্গপুরাণ’, ‘বাঙালী মুসলমানের মন’, ‘গাভী বৃত্তান্ত’, ‘সিপাহী যুদ্ধের ইতিহাস’, ‘অলাতচক্র’, ‘আহমদ ছফা গল্পসমগ্র’, ‘শ্রেষ্ঠ উপন্যাস-আহমদ ছফা’, ‘প্রবন্ধসমগ্র আহমদ ছফা’ (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ড)।
কপিরাইট নিবন্ধক (যুগ্ম সচিব) জাফর রাজা চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের রায় বাংলাদেশে এটাই প্রথম। এতে অন্যান্য লেখকের কাজও সুরক্ষিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।’
এর আগে ফকির আনোয়ার হোসেন মন্টু শাহের লেখা ‘লালন-সংগীত’ নামে তিন খণ্ডের বই কেবল প্রচ্ছদ বদলে প্রকাশের অভিযোগ ওঠে হাওলাদার প্রকাশনীর বিরুদ্ধে। কপিরাইট কার্যালয় তাদের রায়ে মন্টু শাহের ভাতিজি কাকলী খাতুনকে বইগুলোর স্বত্ব ফিরিয়ে দেয়। পরে হাওলাদার প্রকাশনী এ আদেশের বিরোধিতা করে আপিল করে, যা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।
এ রায়ের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মো. মাকসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’
অপরদিকে নূরুল আনোয়ার বলেন, মো. মাকসুদ যে অপরাধ করেছেন, তা শাস্তিযোগ্য। কিন্তু তাঁকে কোনো শাস্তি সেই অর্থে দেওয়া হয়নি।
নূরুল আনোয়ারের ভাষ্য
কপিরাইট অফিসে দেওয়া লিখিত অভিযোগে নূরুল আনোয়ার বলেন, আহমদ ছফা চিরকুমার থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের ২৮ জুলাই মারা যান। ব্যক্তিগত সম্পর্কে তিনি আহমদ ছফার ভ্রাতুষ্পুত্র (সৎভাইয়ের ছেলে)। আহমদ ছফা তাঁকে কাছে রেখে লালনপালন করেন। চাচার (ছফা) কাছে থেকেই তিনি পড়াশোনা ও লেখালেখির দীক্ষা নেন। মৃত্যুর দিনও তিনি আহমদ ছফার শয্যাপাশে ছিলেন। আহমদ ছফার পরিবারে সাহিত্য সম্পর্কে ধারণা এবং তাঁর বইগুলো দেখাশোনা করার মতো কোনো যোগ্য লোক আর কেউ ছিলেন না। ফলে তাঁর রচিত সব বইয়ের স্বত্বাধিকার লিখিতভাবে তিনি (ছফা) তাঁকে প্রদান করেন।
শুনানিতে নূরুল আনোয়ার বলেন, কেবল আহমদ ছফা নয়, তাঁর (আহমদ ছফা) আপন বোন বিলকিছ খাতুনও ২০০৭ সালে তাঁকে (নূরুল আনোয়ার) সব বইয়ের স্বত্বাধিকার দিয়ে যান। পরে তিনি মারা যান। বিলকিছ খাতুনের এক পুত্রসন্তান ছিলেন। তিনিও পরে মারা যান। তাঁরা জীবিত থাকা অবস্থায় কখনো স্বত্বাধিকার দাবি করেননি। কারণ, তারা জানতেন তাঁকে বৈধভাবে স্বত্বাধিকার দেওয়া হয়েছে।
শুনানিতে নূরুল আনোয়ার উল্লেখ করেন, আহমদ ছফার সব লেখা নিয়ে বর্তমানে নয় খণ্ড রচনাবলি তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক লেখা তাঁর সংগৃহীত ও সম্পাদিত। ২০০৮ ও ২০১১ সালে খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি বইগুলো প্রকাশ করে এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন খণ্ড পুনর্মুদ্রণ ও বাজারজাত হয়। বর্তমানেও বইগুলো বাজারে আছে।
নূরুল আনোয়ার উল্লেখ করেন, প্রতিটি খণ্ডেই তাঁর লেখা ভূমিকা, প্রবন্ধ ও পাদটীকা যুক্ত করেন। একটি খণ্ডে একটি মুদ্রণপ্রমাদ রয়ে যায়। কিন্তু ২০১৪ সালে হাওলাদার প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মো. মাকসুদ তাঁর লেখা ভূমিকা, প্রবন্ধ ও পাদটীকাসহ এই বইগুলো হুবহু প্রকাশ করেন। এমনকি মুদ্রণপ্রমাদও তিনি সংশোধন করেননি। এ বিষয়ে তিনি সূত্রাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে কর্তৃপক্ষ দেখতে পায়, মো. মাকসুদ যে বইগুলো ছেপেছেন, তা আগেই বিভিন্ন প্রকাশনীর দ্বারা প্রকাশিত। মো. মাকসুদ তখন নিজেকে রক্ষার জন্য ২০১৭ সালে সিরাজুল আনোয়ারের (নূরুল আনোয়ারের ভাই) সঙ্গে পূর্ব তারিখ (ব্যাক ডেট) দিয়ে একটি চুক্তিনামা করেন। এতে তারিখ উল্লেখ করেন ১৫.০৩.২০০৫। অথচ চুক্তিনামার নোটারি করেন ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। ২০০৫ সালে মাকসুদের কোনো প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানই ছিল না। তাঁর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান চালু হয় ২০১৩ সালে।
নুরুল আনোয়ার উল্লেখ করেন, তিনি এই বইগুলোর রয়্যালটি চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোয় মো. মাকসুদ তাঁর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৮৫/৪২০/৪০৬ ধারায় ঢাকার ১৩ নম্বর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০১৮ সালে সিআর মামলা দায়ের করেন, যা দুই দফা তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ওই মামলা চলমান থাকা অবস্থায় কোনো মামলা নেই মর্মে মিথ্যা অঙ্গীকারনামা দিয়ে ২০১৯ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন, যা কপিরাইট আইনের ৮৮ ধারার বিধানমতে দণ্ডযোগ্য অপরাধ।
হাওলাদার প্রকাশনীর মো. মাকসুদের ভাষ্য
কপিরাইট কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে হাওলাদার প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মো. মাকসুদ বলেন, তিনি আহমদ ছফার বৈধ ওয়ারিশদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিবলে এবং সুস্পষ্ট অঙ্গীকারনামা দাখিল করে কপিরাইট সনদ গ্রহণ করেছেন। নূরুল আনোয়ারের কাছে কোনো কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন সনদ নেই।
মো. মাকসুদ বলেন, নূরুল আনোয়ার ১ জুলাই ২০০০ তারিখে সাদা কাগজে আহমদ ছফা স্বাক্ষরিত একটি হস্তান্তর দলিল দাখিল করেছেন, যেখানে কোনো মেয়াদ উল্লেখ নেই। একই ভাগে বিলকিছ খাতুন স্বাক্ষরিত স্বত্ব হস্তান্তর দলিলেও কোনো মেয়াদ উল্লেখ নেই। ফলে কপিরাইট আইন ২০০০ (২০০৫ সালে সংশোধিত) এর ১৯ এর ৫ ধারা মতে, দলিলটির মেয়াদ আইনত শেষ বা উত্তীর্ণ। এ ছাড়া দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে, সাদা কাগজে স্বাক্ষরিত কোনো দলিলের আইনত ভিত্তি নেই।
হাওলাদার প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আরও উল্লেখ করেন, আহমদ ছফার আপন বোন বিলকিছ খাতুনের ওয়ারিশরা আহমদ ছফার গ্রন্থ ও প্রবন্ধসমূহ দেখাশোনা, তদারকি, রক্ষণাবেক্ষণ, ভবিষ্যতে মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য নূরুল আনোয়ারকে আমমোক্তার নিযুক্ত করেন। কিন্তু নূরুল আনোয়ার এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করায় ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর তাঁরা আমমোক্তারনামাটি বাতিল করেন।
মো. মাকসুদ বলেন, নূরুল আনোয়ার যদি বৈধ ওয়ারিশ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন, তবে তিনি তাঁর প্রাপ্য রয়্যালটি প্রদান করবেন।
পর্যবেক্ষণ ও রায়
গত বছরের ২৪ মার্চ কপিরাইট কার্যালয় দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর তাদের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে, মো. মাকসুদ মরহুম বিলকিছ খাতুনের দুই কন্যা ও পুত্র জামাল উদ্দিনের সকল ওয়ারিশরা এবং বৈমাত্রেয় ভাই আবদুল ছবির চার পুত্রের মধ্যে দুজনের সঙ্গে গত ৫ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে চুক্তিনামা সম্পাদন করেন। কিন্তু তাঁদের ঠিকমতো রয়্যালটি দেন কি না, এমন কোনো বিবরণ জমা দেননি। এমনকি চুক্তিনামা সম্পাদনের আগেই তিনি বই প্রকাশ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অঙ্গীকারনামায় মামলা নেই মর্মে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগও সত্য প্রমাণিত হয়েছে। আহমদ ছফার বইয়ে নূরুল আনোয়ারের লেখা ভূমিকা, পাদটীকা মো. মাকসুদ তাঁর প্রকাশিত খণ্ডে হুবহু প্রকাশ করেন।
অপরদিকে নূরুল আনোয়ার লেখক আহমদ ছফার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে ছিলেন এবং ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ হিসেবে মৃত্যুর পর তাঁর কবরের জমি ক্রয়ের রসিদ দাখিল করেন। উত্তরাধিকারীদের মধ্যে তিনি একমাত্র শিক্ষিত ব্যক্তি। আহমদ ছফার মৃত্যুর পর দীর্ঘ সময় কেউ তাঁর রচনাসমূহ প্রকাশের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। সাত বছর পর নূরুল আনোয়ার প্রচুর পরিশ্রম ও অনুসন্ধানপূর্বক বিভিন্ন উৎস থেকে আহমদ ছফার রচনাবলি সংগ্রহ করে প্রথম আট খণ্ডে এবং তিন বছর পরে নবম খণ্ড প্রকাশ করেন। কিন্তু তিনি লেখকের অপর উত্তরাধিকারীদের সঠিকভাবে রয়্যালটি প্রদান করেননি। এ কারণে এককভাবে তাঁর হাতে বই প্রকাশ, রয়্যালটি সংগ্রহ ও বণ্টনের দায়িত্ব দেওয়া সঠিক হবে না। অন্য উত্তরাধিকারীদের কাছেও তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
এ পর্যায়ে কপিরাইট অফিস আহমদ ছফার সান্নিধ্য লাভ করেছেন এমন কয়েকজন লেখকের মতামত গ্রহণ করে। তার মধ্যে রয়েছেন ড. সলিমুল্লাহ খান, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা ও মাহমুদুল নিজামী। তাঁরা একমত হন যে আহমদ ছফার শক্তিশালী সমাজদর্শন, তত্ত্বসমৃদ্ধ ক্ষুরধার লেখা এ দেশের অমূল্য সম্পদ। তাঁর কালোত্তীর্ণ রচনা মানবকল্যাণ, দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে সক্ষম। তাই দেশ ও জনগণের স্বার্থে কোনোভাবেই আহমদ ছফার রচনাবলি প্রকাশ বন্ধ করা সমীচীন হবে না। বরং তাঁর লেখা কীভাবে সহজলভ্যভাবে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই উপায় বের করা জরুরি।
পাশাপাশি তাঁরা এ অভিমতও ব্যক্ত করেন যে আহমদ ছফার বোনের উত্তরাধিকারীরা অত্যন্ত হতদরিদ্র। দীনহীন অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছেন তাঁরা। মুসলিম আইন অনুযায়ী যেহেতু তাঁরা উত্তরাধিকারী, তাই প্রাপ্য রয়্যালটি থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা ঠিক হবে না।
এ অবস্থায় নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে বই প্রকাশ করার বিষয়ে মত দেন কপিরাইট নিবন্ধক। কপিরাইট ডেপুটি রেজিস্ট্রার, চট্টগ্রামের চন্দনাইশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ড. সলিমুল্লাহ খানের মতো খ্যাতিমান গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব, নূরুল আনোয়ার কিংবা আহমদ ছফার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নিয়ে এ কমিটি গঠন করা যেতে পারে বলে মত দেওয়া হয়।
কপিরাইট নিবন্ধক জাফর রাজা চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় কপিরাইট আইনের ৮৭ ও ৮৮ নম্বর ধারা লঙ্ঘন এবং সম্পাদকের অনুমতি ছাড়া তাঁর সম্পাদিত রচনাবলি, ভূমিকা ও লেখা হুবহু প্রকাশ করায় ৭১ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে মো. মাকসুদের অনুকূলে দেওয়া আহমদ ছফার রচিত ১০টি গ্রন্থের কপিরাইট সনদ বাতিলের জন্য কপিরাইট বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়। পরে গত ৪ এপ্রিল কপিরাইট বোর্ডের চেয়ারম্যান সাবিহা পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মো. মাকসুদের আপিল আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। ফলে ওই কমিটি ছাড়া আর কোনো পক্ষ আহমদ ছফার বই প্রকাশ করতে পারবে না। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হবে।
তবে কপিরাইট আইনের ৯৬ ধারা অনুসারে বিবাদীপক্ষ রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবে।
কপিরাইট নিয়ে দীর্ঘদিন লেখালেখি করছেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, যিনি বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের চেয়ারম্যান ও কপিরাইট বোর্ডের অন্যতম সদস্য। এ রায় সম্পর্কে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যখন কোনো লেখকের প্রত্যক্ষ উত্তরাধিকারী পাওয়া যায় না, তখন তাঁর সৃজনশীল কাজ পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হয়। আহমদ ছফার বই প্রকাশ ও বিপণনে কমিটি গঠনের যে রায় দেওয়া হয়েছে, তাকে স্বাগত জানাতে হয়।