কোনো ঘোষণা না দিয়েই দেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের বহরের ১০টি উড়োজাহাজের সব কটিই রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বসে যাওয়ায় ফ্লাইট বন্ধ রাখতে হয়েছে। যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে থাকা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন তাসবিরুল আহমেদ চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘টেকনিক্যাল’ কারণে সাময়িকভাবে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রাখতে হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আবার ফ্লাইট চালু করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
১০ বছর আগে চালু হওয়া এই বিমান সংস্থাটি বেশ কয়েক মাস ধরে নানা কারণে পর্যায়ক্রমে ফ্লাইটের সংখ্যা ও গন্তব্য কমিয়ে আনে।
ইউনাইটেড এয়ারের একটি সূত্র জানায়, সর্বশেষ ইউনাইটেড এয়ার ঢাকা-চট্টগ্রামে প্রতিদিন দুটি ফ্লাইট এবং কক্সবাজার, সিলেট ও যশোরে একটি করে ফ্লাইট চালাত। এর বাইরে আন্তর্জাতিক গন্তব্যে মালয়েশিয়া ও কলকাতা ফ্লাইট ছিল। গত মাসের শেষ দিকে এসে কোনো ঘোষণা না দিয়েই সব কটি ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বেসরকারি বিমান চলাচল (সিভিল এভিয়েশন) কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটির কাছে সিভিল এভিয়েশনের পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২৭ কোটি টাকা। বকেয়া পরিশোধের জন্য কিছুদিন পরপর তাগাদাপত্র দিয়েও কাজ হয়নি।
এর মধ্যে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। তিন মাস ধরে তাঁদেরও বেতন-ভাতা বাকি আছে। এমডি বিদেশে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান।
প্রতিষ্ঠানটির এমডি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি মেয়ের বিয়ের কারণে লন্ডনে আছেন। এর মধ্যেও তিনি কাজ করছেন। তিনি বলেন, তিনি পুঁজিবাজার থেকে আরও ৪০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
এদিকে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাঁরা ইউনাইটেড এয়ারের শেয়ার কিনেছেন, তাঁরা উদ্বিগ্ন। কারণ, এর আগে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আর্থিক সংকটের কারণে ইউনাইটেড এয়ারের ফ্লাইট পরিচালনা কিছুদিন বন্ধ থাকায় এর শেয়ারের ব্যাপক দরপতন হয়।