সোমবার বিকেল তিনটা ২৫ মিনিট। খুলে দেওয়া হলো খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) প্রধান ফটক। দ্বিতীয় তলায় সিঁড়িতে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কাউন্সিলরদের ভিড়। এর মধ্যে অনেকেরই হাতে ফুল। উৎসুক মানুষগুলোর চোখ প্রধান ফটকের দিকে।
বিকেল সাড়ে তিনটায় কালো রঙের গাড়ি থেকে মূল ফটকের সামনে নামলেন কেসিসির নির্বাচিত মেয়র মনিরুজ্জামান মণি। সঙ্গে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এবার দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নিলেন তিনি। দায়িত্ব নিলেন এক বছর ১৯ দিন পর।
উচ্চ আদালতের আদেশে মেয়রের দায়িত্ব ফিরে পেয়েছেন মো. মনিরুজ্জামান মণি। এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার সকালে পূর্বের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
নিজ কক্ষে ঢুকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মেয়র বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমরা যথাযথভাবে পালন করব। কেসিসির ঐতিহ্য অনুযায়ী সাধারণ পরিষদের সব সদস্য মিলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেভাবেই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হবে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ সময় আমাকে দায়িত্ব থেকে দূরে থাকতে হয়েছে। আবার আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় সেটা বিবেচনা করেছে। এ কারণে খুলনাবাসীর পক্ষ থেকে আমি মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করি, আমাদের এ মেয়াদের মধ্যে আমরা যেন নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারি, সরকারের পক্ষ থেকে সেই সহযোগিতা যেন থাকে। পাশাপাশি সরকারি অন্যসব দপ্তরও যেন আগের মতো আমাদের সহযোগিতা করে।’
কেসিসি সূত্রে জানা গেছে, নাশকতার দুটি মামলায় মেয়রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ায় ২০১৫ সালের ২ নভেম্বর মনিরুজ্জামানকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এ সময় ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্যানেল মেয়র আনিছুর রহমান বিশ্বাস। বরখাস্ত হওয়ার প্রায় ৮ মাস পর গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মনিরুজ্জামান মণি। হাইকোর্ট বিভাগ স্থানীয় সরকার বিভাগের বরখাস্তের আদেশের ওপর ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১৩ নভেম্বর সরকারের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়ে স্থগিতাদেশ বহাল রাখা হয়।
আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘হাইকোর্টের রিট পিটিশন নম্বর ৭০৯৮ / ২০১৬ মূলে প্রদত্ত স্থগিতাদেশ বজায় থাকাকালীন কেসিসির মেয়র মনিরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশটির কার্যকারিতা স্থগিত থাকবে।’