কমিউনিটি গ্রুপের সভা শুধু কাগজে-কলমে!

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় কমিউনিটি গ্রুপের নিয়মিত মাসিক সভা হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ কাগজে-কলমে কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) প্রতি মাসের সভার কার্যবিবরণী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জমা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যানের অভিযোগ, ওই সভার কার্যবিবরণীর একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্ল্লেক্স সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের জুলাই থেকে এ এলাকায় ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হয়। পরে এসব ক্লিনিকে ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর সিএইচসিপি নিয়োগ দেওয়া হয়। আর ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতি ক্লিনিকে ৯-১৩ সদস্যের একটি কমিউনিটি গ্রুপ গঠন করা হয়। কমিটিতে স্থানীয় নির্বাচিত ইউপি সদস্য, জমিদাতা, একজন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, এলাকার দরিদ্র/ভূমিহীন ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর দুজন, সিএইচসিপি, আশপাশের এলাকার চারজন নারীকে সদস্য করা হয়।
সূত্র জানায়, প্রতি মাসে কমিউনিটি গ্রুপের সব সদস্যকে নিয়ে মাসিক সভা করে তার কার্যবিবরণী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্লিনিকে কাগজে-কলমে সভা দেখিয়ে কার্যবিবরণী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জমা দিলেও তা ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেওয়া হচ্ছে না।
মুন্সিরডেইল কমিউনিটি গ্রুপের সদস্য আজিজুল হক বলেন, সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে মাসিক সভা দেখানো হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো মাসিক সভা হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, ‘সভা না হলেও কয়েকবার নিজেই স্বাক্ষর করেছি। পরে গত মাসে সভা না ডেকে আবার স্বাক্ষর নিতে এলে আমি নিজেই খাতাটি জব্দ করি। বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।’
ঘটিভাঙ্গা কমিউনিটি গ্রুপের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিন অভিযোগ করেন, কোনো দিন মাসিক সভা হয়নি। কিন্তু কাগজে-কলমে মাসিক সভার কার্যবিবরণী দেখানো হচ্ছে।
তবে ঘটিভাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোহাম্মদ আলী হোছাইন পাল্টা অভিযোগ করেন, অনেকবার সভাপতিকে সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। পরে তাঁর অনুপস্থিতিতে মাসিক সভা করা হয়েছে।
স্থানীয় কুতুবজোম ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম বলেন, ‘এই এলাকায় তিনটি ক্লিনিক রয়েছে। কিন্তু কোনো দিন মাসিক সভার কার্যবিবরণী আমাকে দেওয়া হয়নি।’
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল মাবুদ প্রথম আলোকে বলেন, নিয়মিত কমিউনিটি গ্রুপের মাসিক সভা না করার অভিযোগে ইতিমধ্যে আটজন সিএইচসিপিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।