নিউজপ্রিন্টের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। দেড় বছর আগে প্রতি টন নিউজপ্রিন্টের দাম ছিল যেখানে ৫৭০ ডলার, এখন তা ৮৯০ ডলার। এদিকে করোনাকালে বিজ্ঞাপনের বাজার ৫৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। সংবাদপত্রশিল্প একটি সেবাশিল্প। শিল্পটি রুগ্ণ। তারপরও করোনাকালে এ শিল্প সরকারের কাছ থেকে বিশেষ কোনো সুবিধা পায়নি এবং পাচ্ছে না।
আজ শনিবার নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে টাইমস মিডিয়া লিমিটেড ভবনে অনুষ্ঠিত এ সভায় নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক ও প্রকাশক এম এ মালেক, ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহ্ফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান, নিউএজ–এর প্রকাশক ও সম্পাদকীয় বোর্ডের চেয়ারম্যান এ এস এম শহীদুল্লাহ খান, সংবাদ সম্পাদক ও প্রকাশক আলতামাশ কবির, ভোরের কাগজ–এর পরিচালক তারিক সুজাত ও বণিক বার্তা সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ প্রমুখ।
সভায় নোয়াব সদস্য রিয়াজউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এক মিনিট নীরবতা পালন করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ বছর একুশে পদকের জন্য মনোনীত হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেককে অভিনন্দন জানানো হয়।
সভায় বলা হয়, সংবাদপত্রের প্রধান কাঁচামাল নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হচ্ছে। এটা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হতে পারে। বিজ্ঞাপনের আয়ের ওপর ৪ শতাংশ উৎসে কর (টিডিএস) এবং উৎসস্থলে কাঁচামালের ওপর ৫ শতাংশ আগাম আয়কর (এআইটি) দিতে হচ্ছে। অথচ অধিকাংশ সংবাদপত্রের ৯ শতাংশ লভ্যাংশই থাকে না। টিডিএস ২ শতাংশ এবং এআইটি শূন্য করা জরুরি। সংবাদপত্রের কর্মীদের আয়কর মালিকেরা দেন। কর্মীদের বেতনের ৭০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার পুরোটাই করমুক্ত করা প্রয়োজন।
সভায় সংবাদপত্রশিল্পের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করা হয় এবং সদস্যদের জানানো হয়, আগামী বাজেট সামনে রেখে ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠক করে নোয়াব। রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হওয়া সংবাদপত্রশিল্প টিকিয়ে রাখতে কর কমানোসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়েছে এনবিআরের কাছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে দাবি আদায়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা হবে।
এনবিআরের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরও জানানো হয়েছিল, সংবাদপত্র সেবাশিল্প হলেও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি, অনিবন্ধিত কোম্পানি ও নন-রেসিডেনসিয়াল শ্রেণিতে রেখে ৩০ শতাংশ করপোরেট কর নির্ধারণ করা হয়েছে। রুগ্ণ শিল্প হিসেবে সংবাদপত্রশিল্পের এ করপোরেট কর অনেক বেশি। অথচ মুনাফা অর্জনকারী শিল্পের কর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভায় নোয়াবের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। সভায় এ কে আজাদ সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হন।