দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে উদ্বোধন করা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (টিএসসিসি)। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি চালু করা সংস্কৃতিকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। তবে নতুন ভবন চালু হলেও এতে সুষ্ঠু সংস্কৃতিচর্চা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। গতকাল বুধবার বিকেলে ‘শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ নামে ভবনটির উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্ট বাংলাদেশ লিমিটেড (ইসিবিএল) নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে টিএসসিসি ভবনের জন্য একটি নকশা তৈরি করিয়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নকশাটি যাচাই না করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামসংলগ্ন পানির ট্যাংকের পাশে ১৯৯১ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। কিন্তু অর্থাভাবে এর কাজ থেমে যায়। ২০০৬ সালের জুনে নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু করলে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে ৮ অক্টোবর ভবনের ছাদের কাঠামো ভেঙে পড়ে। ফলে এটি পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়। সর্বশেষ ২০১৩ সালে বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছুটা গতি আসে নির্মাণকাজে।
টিএসসিসির বর্তমান পরিচালক টি এম এম নূরুল মোদ্দাসের চৌধুরী বলেন, ভবনটির অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। এখন ভেতরে সাজসজ্জা, সাউন্ড সিস্টেম, লাইট ইত্যাদির কাজ করতে হবে। তিনি জানান, নানামুখী ব্যবহারের উপযোগী করে টিএসসিসি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে নাটকের মহড়া, নাটক মঞ্চায়ন, সেমিনার, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, চিত্র প্রদর্শনী ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পুরোপুরি চালু হলে এটি শিক্ষক-ছাত্রদের সংস্কৃতিচর্চার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে। তবে শুরু থেকেই টিএসসিসি চালু আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নাট্যব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বলেন, ভবনের ছোট ছোট কক্ষ সাংস্কৃতিক চর্চার মহড়ার উপযুক্ত নয়। ছোট্ট একটি মিলনায়তনের এই টিএসসিসিতে সংস্কৃতিচর্চা হতে পারে না। সংস্কৃতিকর্মীরা চান নতুন নকশায় সংস্কৃতিচর্চার উপযোগী করে টিএসসিসি নির্মাণ করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে কাজ করে গেছে। ভবনের বাকি কাজ এক মাসের মধ্যেই শেষ হবে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, এটি চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গতিশীলতা আসবে।