কাল ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় দেশের বহুল আলোচিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে কাল বুধবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানা গেছে, কাল বুধবার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বরদীর রূপপুরে প্রকল্প মাঠের পশ্চিম পাশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর পাকশীর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের পরিদর্শন বাংলোয় দুপুরের নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে রূপপুর প্রকল্প মাঠের পূর্ব পাশে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থল থেকে জেলার ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১৮টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদীতে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। ভেদাভেদ ভুলে তাঁরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পাকশীর জনসভাকে উত্তরবঙ্গের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভায় পরিণত করার জন্য স্থানীয় সাংসদ শামসুর রহমানের নেতৃত্বে চলছে নানা প্রচার-প্রচারণা। দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রতিদিনই সভা করছেন। রং-বেরঙের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে ঈশ্বরদী। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক তোরণ।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ শামসুর রহমান বলেন, পাকশীর জনসভায় ১০ লাখ মানুষের অংশগ্রহণের লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। পাবনা ছাড়াও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলা এবং দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলা থেকেও দলীয় নেতা-কর্মীরা পাকশীর ওই জনসভায় অংশ নেবেন বলে জানান তিনি।
ঈশ্বরদী পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মাহজেবিন শিরিন বলেন, সাধারণ মানুষ ছাড়াও এক লাখ নারীকে জনসভায় উপস্থিত করার লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিকে ঈশ্বরদীতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিনই প্রশাসনের উদ্যোগে সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত রোববার পাকশীতে পরিদর্শন বাংলোয় পাবনার জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ নিরাপত্তামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ নানা দাবির কথা ভাবছেন।
ঈশ্বরদী সাঁড়ামাড়োয়ারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আয়নুল ইসলাম ও ঈশ্বরদী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আফরোজা বেগম বলেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে জনসভায় অংশ নেবেন এবং ঐতিহ্যবাহী এই দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি করার দাবি জানাবেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া পাকশী পেপার মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা জানান, মহাজোট সরকার গঠনের আগে পাবনায় এক টেলি কনফারেন্সে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি পাকশী পেপার মিলটি চালু করবেন। তাঁরা সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবি জানাবেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন মহল থেকে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের আধুনিকায়ন, শহরের রেলগেটে উড়ালসেতু নির্মাণ ও ঈশ্বরদীতে একটি স্থলবন্দর নির্মাণের দাবি উঠেছে।