কিশোর গ্যাং দমনে সামাজিক সচেতনতাও জরুরি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, কিশোর গ্যাং দমনে র্যাব-পুলিশ ও সমাজকল্যাণ কেন্দ্র কাজ করলেও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেই চলছে। তিনি বলেছেন, শুধু আভিযানিক কার্যক্রম নয়, কিশোর গ্যাং দমনে সামাজিক সচেতনতাও জরুরি।
রাজধানীর হাতিরঝিল থানার মধুবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান খান এসব কথা বলেন। কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ‘সবার হোক একটাই পণ, কিশোর অপরাধ করব দমন’ শীর্ষক জনসচেতনতামূলক প্রচারণা কার্যক্রমসংক্রান্ত টিভি বিজ্ঞাপনের (টিভিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে র্যাব।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ মোহা. আবদুর রশিদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন র্যাব সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে রাজধানীর বেশ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সম্প্রতি কিশোরেরা নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। কিশোর গ্যাং দমনে পুলিশ, র্যাব ও সমাজকল্যাণ কেন্দ্র কাজ করে যাচ্ছে। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। করোনাকালে স্কুল–কলেজ বন্ধ থাকায় হাতিরঝিল এলাকায় অনেক অপরাধ (ক্রাইম) বেড়ে যায়। এমনভাবে বেড়েছিল, যেন কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে তাদের না পাঠিয়ে উপায় ছিল না। কিশোর গ্যাং বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছে। একপর্যায়ে সংশোধনাগারে স্থান সংকুলান হয়নি।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, কিশোর গ্যাং দমনে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত চার শতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যকে আইনের আওতায় এনেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের হালনাগাদ তথ্যের দিকে তাকালে দেখা যায়, অনেক দিন আগে রাজধানীতে কিশোরী ঐশী মাদকের জন্য তার মা-বাবাকে খুন করে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সবাই কাজ করছে। সন্তানের প্রতি মা-বাবারা খেয়াল না রাখলে মাদকের বিস্তার রোধ করা যাবে না। তিনি বলেন, বিজ্ঞাপনচিত্রে দেখা গেল মায়ের অসচেতনতার জন্য তাঁর সন্তানটি নষ্ট হয়ে গেল। আদরের দুলাল কীভাবে বখাটে হয়ে গেল।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, সন্তানকে নিয়ে অন্তত একবেলা খাওয়ার রেওয়াজ চালু করতে হবে মা-বাবাকে। তাঁরা যেন সন্তানের সঙ্গে কথা বলেন, মেলামেশা করেন। একসঙ্গে খেতে বসেন। দুপুরে না পারলেও সকালে বসেন। আইন কঠোর করলেও সবার সহযোগিতা না পেলে কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সন্তান কোথায় যায়, কী করে, এসব বিষয়ে মা-বাবাকে খেয়াল রাখতে হবে। র্যাবের বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ বাস্তব ও সময়োপযোগী। র্যাব অপরাধ দমনের পাশাপাশি আরও অনেক টিভিসি করেছে। শুধু আভিযানিক কার্যক্রম নয়, সন্তানের প্রতি মা-বাবার খেয়াল রাখা। র্যাব-পুলিশ জনগণের পাশেই আছে। কিশোর গ্যাং দমনে সামাজিক সচেতনতা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।