বাড়ির উঠানে পাশাপাশি তিনটি গরু নিথর পড়ে আছে। এর মধ্যে দুটি গরুর পেটে বাচ্চা ছিল। তিনটি গরুর মৃত্যুতে উঠানের একপাশে নিস্তব্ধ হয়ে বসে আছেন গরুগুলোর মালিক কৃষক খেজমত আলী। খেজমত কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখী গ্রামের বাসিন্দা।

গত শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ভোর চারটার মধ্যে তিনটি গরু মারা যায়। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেবেন খেজমত আলী। সকালে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

খেজমত আলী জানান, প্রায় আট বছর আগে বড় গাভিটি কেনা হয়। ওই গাভি থেকে আরেকটি গাভি হয়। সেটার বয়স পাঁচ বছর। প্রথম গাভি থেকে একটি ষাঁড় হয়। সেটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় গাভি থেকে ১৪ মাসের একটি বলদ গরু আছে। তিনটা গরুই বাড়ির উঠানের পাশে গোয়ালঘরে বাঁধা ছিল। রাত একটার দিকে হঠাৎ গরুগুলো উচ্চ স্বরে ডাকতে থাকে। ঘর থেকে বের হয়ে দেখতে পান, গরুগুলো অস্থিরভাবে লাফাচ্ছে। দেড়টার দিকে ১৪ মাসের বলদ গরুটা মারা যায়। দুইটার দিকে একটা এবং সর্বশেষ ভোর চারটার দিকে বাকি আরেকটা মারা যায়।

খেজমত আলীর ছেলে তাজউদ্দীন বলেন, তিনটি গরু বাড়ির সবাই মিলে পালন করতেন। দুটি গরুর পেটে সাত মাসের বাচ্চা ছিল। গরুগুলো মারা যাওয়ায় তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাঁর বাবা কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাজউদ্দীন অভিযোগ করেন, কয়েক মাস আগে তাঁর বোনের সঙ্গে স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়। ছাড়াছাড়ির পর ওই স্বামী হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, গরুর খাবারে রাতের বেলায় বিষপ্রয়োগ করায় গরুগুলো মারা গেছে। এ ব্যাপারে তাঁরা থানায় অভিযোগ দেবেন।

সকালে খবর পেয়ে ওই বাড়িতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দিনবন্ধু সাহাসহ কয়েকজন কর্মকর্তা যান। দিনবন্ধু প্রথম আলোকে বলেন, ‘গরুর খাবারে বিষের গন্ধ পাওয়া গেছে। এর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো ঢাকায় পাঠানো হবে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আশাদুল হক জানান, থানায় মামলা হলে গরুগুলোর ময়নাতদন্ত করা হবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দীন জানান, মৌখিক অভিযোগ শুনেছি। লিখিত পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।