বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির একটি মামলার বিচারকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা শেষ করেছেন। এখন এই মামলার অপর দুই আসামির আইনজীবীরা জেরা করবেন। এরপর দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করবেন আদালত।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নাল আবেদিন মেজবাহ প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা হয়েছে। আর সেনা-সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলা হয় তিনটি। এসব মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা ও নাশকতার পরিকল্পনা, মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহ এবং দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার যে গতিতে চলছে, তাতে অল্প সময়ের মধ্যে এ মামলার রায় হতে পারে। সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষে যুক্তিতর্কের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণা হবে। এই মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন রয়েছে ১১ ফেব্রুয়ারি।
খালেদা জিয়ার নামে যত মামলা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ-৩ আদালতে বিচারাধীন। সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে মামলার বিচারকাজ। নাইকো দুর্নীতি মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ-৯ আদালতে বিচার শুরুর অপেক্ষায়। এ ছাড়া গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া দুর্নীতির মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদার আবেদন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। যাত্রাবাড়ীতে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলায় খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখিয়ে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া নাশকতার পরিকল্পনা করার অভিযোগ এনে বিস্ফোরক আইনে রাজধানীর গুলশান থানায় একটি, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় দুটি, খুলনায় একটি মামলা করা হয়েছে। যার তদন্ত চলছে।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে—এমন মন্তব্য করার পর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তাঁকে আগামী ৩ মার্চ আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন। এ ছাড়া সরকারবিরোধী বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা আরও দুটি মানহানির মামলা করা হয়েছে। যার তদন্ত চলমান। সোনালী ব্যাংকের ৪৫ কোটি টাকা ঋণ খেলাপের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার একটি আদালত বিচার শুরু করেছেন। সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে আগামী ১ মার্চ। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর এই মামলায় খালেদা জিয়া ও কোকোর স্ত্রী-সন্তানদের বিবাদী করা হয়েছে।