গাড়ি পার্কিংয়ে ওষুধের দোকান ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগ
রাজধানীর কলাবাগানে একটি ভবনের নিচতলায় গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় গড়ে ওঠা হাসপাতালের ওষুধের দোকান, অভ্যর্থনা ডেস্ক, জরুরি বিভাগের একটি কক্ষসহ কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই সঙ্গে আবাসিক ভবন বাণিজ্যিক কাজে ভাড়া দেওয়ার জন্য ভবনমালিককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভবনের ভূতলে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় এবং ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এই অভিযান চালায়। এ সময় উচ্ছেদ ও জরিমানা আদায়ের এ ঘটনা ঘটে।
অভিযানের সময় দেখা যায়, কলাবাগানের একটি সাততলা ভবনটির একটি তলায় ভবনমালিকের বাস। বাকি ছয়তলা একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে ভাড়া দেওয়া। অভিযান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রাজউকের জোন-৫-এর অথরাইজড অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভবনটির নকশা পরীক্ষা করে দেখতে পান, আবাসিক হিসেবে অনুমোদন নেওয়ার পরেও ভবনমালিক এটিকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া নিচতলার প্রায় পুরো অংশটুকু গাড়ি পার্কিংয়ের কাজে ব্যবহার করার কথা থাকলেও সেখানে হাসপাতালের একটি ওষুধের দোকান, অভ্যর্থনা ডেস্ক, আগত ব্যক্তিদের জন্য বসার জায়গা, অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখার কক্ষসহ জরুরি বিভাগের একটি কক্ষ বানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভবনটির অন্যতম মালিক ডা. ফেরদৌস আরা রাজউক কর্মকর্তাদের জানান, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তাঁরা ভবনটির পাশেই আলাদা একটি জায়গা ভাড়া নিয়েছেন। আর ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তাঁরা সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত কর দিয়ে থাকেন। তখন অথরাইজড অফিসার এ জেড এম শফিউল হান্নান তাঁকে বলেন, ভবনের নকশা অনুসারে নিচতলাতেই পার্কিংয়ের জায়গা রাখা বাধ্যতামূলক। আর ভবনটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে আবাসিক হিসেবে। তাই এখানে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার কোনো সুযোগই নেই। তাই নিচতলার সব কটি স্থাপনা উচ্ছেদসহ ভবনমালিককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দীন।
একই এলাকায় আরও সাতটি ভবনে পরিচালিত এই অভিযানে দুই লাখ টাকা জরিমানার পাশাপাশি দুটি ভবনের পার্কিংয়ের জায়গা অবমুক্ত করা হয়।
এদিকে গুলশান অ্যাভিনিউতে পরিচালিত অপর এক অভিযানে গতকাল দুটি করে ভবনের র্যা ম্প এবং গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় বলে জানান জোন-৪-এর অথরাইজড অফিসার মো. আদিলউজ্জামান।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত ১৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি, গুলশান ও উত্তরায় একযোগে এই অভিযান শুরু করে রাজউকের তিনটি বিশেষ দল। প্রথম দফায় ছয় দিনের মধ্যে দুই শর বেশি ভবনে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়।
মাঝে কয়েক দিনের বিরতি শেষে গত ৩১ জানুয়ারি থেকে আলাদাভাবে আবার এই অভিযান শুরু করে রাজউক।