চবিতে গবেষকদের ভিড়, সম্মেলন শুরু

সম্মেলনে ৭৫ বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের ৫০০ তরুণ গবেষক অংশ নিচ্ছেন
ছবি: জুয়েল শীল

‘কল্পনা ও উদ্ভাবনের পথে আগামী প্রজন্ম’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে জামাল নজরুল ইসলাম তরুণ গবেষক সম্মেলন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন উপাচার্য শিরীন আখতার।

ক্যাম্পাসের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মিলনায়তনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি চলবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। উদ্বোধনী আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহ-উপাচার্য বেনু কুমার দে, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন নাসিম হাসান। এতে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পর্ষদ সদস্য ও গবেষক সেঁজুতি সাহা।

বিশেষ বক্তা ছিলেন প্রথম আলোর যুব সমন্বয়ক কর্মসূচির প্রধান মুনির হাসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আরশাদ মোমেন।

সম্মেলনে মইনুল ইসলাম বলেন, ‘বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলামের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আমার কোনো লেখা বা বই বের হলে তাঁকে দিতাম। তিনি পড়ে বলতেন, আপনি সরকারের সমালোচনা করতে দ্বিধা করেন না। আপনার জন্য ভয় হয়।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও প্রধানমন্ত্রী আমার সমালোচনা করেছেন। আমি তাঁর সমালোচনা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু অবস্থানেও দৃঢ় আছি। ফিজিবিলিটি স্টাডি না করে একের পর এক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। আমি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। অপ্রয়োজনীয় ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ধসে গেছে। আমরা চাই না বাংলাদেশের অর্থনীতিও তিন চার বছরে এমন বিপদে পড়ুক। সেজন্য আগাম সতর্কতা দিচ্ছি।'

এ প্রবীণ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ‘কোনো সরকারকে খুশি করার জন্য আমি লেখালেখি করি না। আমি কিছু নীতিতে অটল থাকি। বিএনপি–জামায়াতকে খুশি করার জন্য আমি লিখব না। আবার আওয়ামী লীগকে খুশি করার দায়িত্ব আমি নেব না।’

গবেষক সেঁজুতি সাহা বলেন, বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম তাঁর ক্যারিয়ারের যখন শীর্ষে ছিলেন, তখনই তিনি দেশে চলে আসেন। তিনি চাইলে পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চলে আসেন। বাধা তিনি কম পাননি। কিন্তু এ বাধাকে তিনি সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছিলেন। তাঁর গবেষণা ছিল মানুষের জন্য।

পোস্টারগুলো সাজানো হয়েছে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের বিভিন্ন তলায়
ছবি: জুয়েল শীল

উপাচার্য শিরীন আখতার গবেষণার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণাগারে কাজ করছেন। দেশের মানুষের জন্য সুফল বয়ে আনছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ব্যাঙের নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। সমুদ্রে মাছের নতুন প্রজাতির খোঁজ পেয়েছেন। দেশকে সমৃদ্ধ করছে এসব গবেষণা। নারীরাও পিছিয়ে নেই।

সম্মেলনে দিনব্যাপী আয়োজন

সম্মেলনে ৭৫ বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের ৫০০ তরুণ গবেষক অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা দীর্ঘদিনের প্রাপ্ত গবেষণার ফলাফল ও ভবিষ্যতের নতুন নতুন গবেষণার ধারণা উপস্থাপন করছেন।

মোট ছয়টি শাখায় গবেষকেরা অংশ নিচ্ছেন। এগুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান ও প্রকৌশল, জীববিজ্ঞান, পরিবেশবিজ্ঞান, কৃষি ও উদ্ভিদ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিদ্যা, সমাজবিজ্ঞান ও মানববিদ্যা, বাণিজ্য। এই ছয় বিষয়ে গবেষকেরা গবেষণা কর্ম উপস্থাপন ও গবেষণার পোস্টার প্রদর্শন করছেন।

পোস্টারগুলো সাজানো হয়েছে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের বিভিন্ন তলায়। এসব পোস্টার দেখতে সেখানে যাচ্ছেন গবেষকেরা।