চমেক অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি ছাত্রলীগের একাংশের
পক্ষপাতের অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রলীগের একাংশ।
আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে চমেক অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তারের পদত্যাগ দাবি করেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা। তাঁরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী।
গত ২৯ ও ৩০ অক্টোবর ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার কলেজের একাডেমিক সভায় দুই পক্ষের ৩১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ। তাঁদের প্রতিপক্ষ অংশটি সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।
যে ৩১ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ২৩ জনই নিজেদের পক্ষের বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ অংশটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রলীগের এই অংশের নেতা ও নবগঠিত ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের (ইচিপ) সভাপতি কে এম তানভীর।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২৯ অক্টোবর প্রধান ছাত্রাবাসে সংঘটিত ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। পরদিন মাহাদি জে আকিবের ওপর হামলাকারীদেরও শাস্তি দেওয়া হয়নি। মাহাদির ওপর হামলায় অংশ নেন ১৬ জন। তাঁদের ভিডিও ফুটেজ আছে। এই ঘটনায় থানায় করা মামলায় ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। অথচ, অন্য পক্ষের মাত্র আটজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একাডেমিক কাউন্সিল বৈধ নয়। তারা বহিষ্কারের নামে পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে।
অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের তোষণ করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের একাডেমিক কাউন্সিলে রেখেছেন অধ্যক্ষ। ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারের পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অধ্যক্ষ পক্ষান্তরে জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শুধু মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই ছাত্রলীগের একটি অংশের ২৩ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদিকে ভিডিও ফুটেজ ও এজাহারে নাম থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের অপর অংশের মাত্র আটজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই পক্ষপাতমূলক আচরণের জন্য অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করছেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে ২৩ জনের বহিষ্কারাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। তা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। এ ছাড়া এই পক্ষ তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে ইচিপের নেতা খোরশেদুল ইসলাম, মো. সাকি, প্রণব দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার বলেন, ‘এটা (বহিষ্কার) আমার ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত নয়। একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হলে একাডেমিক কাউন্সিল নেবে।’
২৯ অক্টোবর চমেক ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। সেদিন তিন ছাত্র আহত হন। পরদিন ক্যাম্পাসের সামনে মাহাদি জে আকিবের ওপর হামলা হয়। গুরুতর আহত মাহাদি ২১ দিনের চিকিৎসা শেষে গত বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরেছেন। মাহাদি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগের সমর্থক। ২৯ অক্টোবর আহত হওয়া তিন সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনপন্থী ছাত্রলীগের অনুসারী।