বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর নার্সের হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেন চিকিৎসকেরা। পরে হামলাকারী নার্সের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে চিকিৎসকেরা কাজে যোগ দেন।

গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন বহির্বিভাগের চিকিৎসকেরা। তাঁদের কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে আসা রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন।

একাধিক চিকিৎসক ও নার্সের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফাইজুল হকের কাছে অসুস্থ শিশুসন্তানকে নিয়ে আসেন জ্যেষ্ঠ নার্স এলিজা বেগম ও তাঁর স্বামী শাহ আলম। সিরিয়াল ছাড়া রোগী দেখতে অপারগতা প্রকাশ করেন চিকিৎসক। বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে এলিজা ও তাঁর স্বামী ওই চিকিৎসকের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনার পর নার্স ও তাঁর স্বামীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে হাসপাতালের পরিচালক বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় রাতে নার্সরা বিক্ষোভ করেন। পরে এলিজাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আর তাঁর স্বামী শাহ আলমকে আদালতের মাধ্যমে ওই দিনই কারাগারে পাঠানো হয়। নার্সকে ছেড়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হন চিকিৎসকেরা। এরই প্রতিবাদে গতকাল কর্মবিরতিতে যান তাঁরা।

গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে বহির্বিভাগের চিকিৎসকেরা সেবা বন্ধ করে দিয়ে বেরিয়ে যান। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পরিচালকের কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তাঁরা। বরিশাল-২ আসনের সাংসদ তালুকদার মো. ইউনুসের উপস্থিতিতে চিকিৎসকেরা নার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন। পরে হামলাকারী নার্সের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আশ্বাস দিলে তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন।

এদিকে কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসা বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন বহির্বিভাগে আসা কয়েক শ রোগী। অনেককে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই হাসপাতালের বহির্বিভাগ দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগী ও স্বজনে ঠাসা। দুপুর ১২টায় বহির্বিভাগে কথা হয় আবদুল ফারুক হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী গ্রাম থেকে মাথাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিটও কিনেছেন। কিন্তু ১২টা পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেননি।

হাসপাতালের পরিচালক এস এম সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই নার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মামলার কপিতে সংশোধন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।