জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক থেকে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন সমবায় ব্যাংকের খালি জায়গায় অবৈধভাবে বসা শীতের কাপড়ের দোকানগুলো উচ্ছেদ করেছে ‘ছাত্র ইউনিয়ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এসব দোকান উচ্ছেদ করা হয়।
সমবায় ব্যাংকের এই জায়গাটি প্রায় দুই বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) হিসেবে ব্যবহার করছেন শিক্ষার্থীরা। এখান থেকে সব ধরনের দোকান উচ্ছেদ ও উন্মুক্ত নাট্যমঞ্চ নির্মাণের দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছিল ছাত্র ইউনিয়ন।
গত ২১ নভেম্বর ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: টিএসসিতে কাপড়ের দোকান, ছাত্রলীগের চাঁদা আদায়!’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্র ইউনিয়ন সূত্র জানায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের সদরঘাট শাখা (বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে অবস্থিত) স্থানান্তর এবং প্রস্তাবিত টিএসসির জায়গা দখলমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করে ছাত্র ইউনিয়ন। পরে টিএসসি থেকে ২৫-৩০টি শীতের কাপড়ের দোকান উচ্ছেদ করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উচ্ছেদ অভিযানের সময় কিছু শীতের কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। এ সময় উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী সুজন দাশ চাপাতি হাতে তাঁদের দিকে তেড়ে আসেন এবং ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ছাত্র ইউনিয়ন ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে সুজন দাশের কর্মকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
গতকাল বিকেলে ছাত্র ইউনিয়নের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে শিক্ষার্থীদের নানাভাবে প্রতারিত করে নিজেদের ফায়দা হাসিল করছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। এ ছাড়া প্রস্তাবিত টিএসসির জায়গা বারবার ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দিয়ে কতিপয় নেতা টাকা আদায় করছেন। গত শীতের ছুটির আগেও ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে এ জমি দখলমুক্ত করা হয়েছিল।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আল আমিন বলেন, সুজন দাশের ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। আগামী রোববার লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে। নূর মোহাম্মদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেক খুঁজেও সুজনকে পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, সুজন দাশ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কর্মী নেই। টিএসসিতে কাপড় ব্যবসায়ীদের জায়গা দেওয়ার সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত নয়।