পশ্চিমাঞ্চলের লালমনিরহাট রেল বিভাগে মারাত্মক জনবল–সংকটে বর্তমানে ১৮টি ট্রেন ও ২০টি রেলওয়ে স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এতে একদিকে যেমন জনদুর্ভোগ বেড়েছে, অপরদিকে উপার্জন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে রেলওয়ে বিভাগ।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের ১৭৬টি স্টেশনমাস্টার পদের মধ্যে ৭৬টিই শূন্য। বাকি ১০০ জনের সঙ্গে বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক ২৮ জন স্টেশনমাস্টার কাজ করছেন। মোটিভ মাস্টার বা ট্রেনচালকের ৮৩টি পদের ৪৭টি শূন্য। এ পদে বর্তমানে চুক্তিবদ্ধ ৭ জনসহ ৪৩ জন আছেন। ট্রাফিক বিভাগের পরিচালনাধীন ১১৩টি রেলগেটের মধ্যে মাত্র ৩৬টি গেটে লোক আছে। তাও প্রতিটি গেটে ৩ জন করে ৩৬ গেটে ১০৮ জন গেটম্যান থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৫৮ জন।
লালমনিরহাট রেল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বিভাগে বি এবং ডি শ্রেণির ৮০টি স্টেশন রয়েছে। প্রতিটিতে কমপক্ষে তিনজন স্টেশনমাস্টার, ছয়জন পয়েন্টস ম্যান, তিনজন ট্রাফিক গেটম্যান, তিনজন পোর্টার ও তিনজন ক্লিনারের পদ রয়েছে। কিন্তু এসব পদে প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় কমপক্ষে ২০টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে লালমনিরহাটের রইছবাগ, আদিতমারী, বাউরা, রংপুরের অন্নদানগর, চৌধুরানী, গাইবান্ধার হাসানগঞ্জ, নলডাঙ্গা, কুপতলা, মহিমাগঞ্জ ও বগুড়ার পাঁচপীর বাজার, ভেলুরপাড়া অন্যতম।
বর্তমানে লালমনিরহাট রেল বিভাগের আওতায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী, লালমনিরহাট-কাউনিয়া, কাউনিয়া-দিনাজপুর, কাউনিয়া-সান্তাহার, লালমনিরহাট-পার্বতীপুর, দিনাজপুর-পঞ্চগড়, তিস্তা-রমনাবাজা-কুড়িগ্রাম রুটে মোট ৬২টি ট্রেন চলাচল করছে। এর মধ্যে ১২টি আন্তনগর, ২০টি মেইল, ২৬টি লোকাল ও চারটি ডেমু ট্রেন রয়েছে।
অপরদিকে বন্ধ রয়েছে ১৮টি ট্রেন (৯ জোড়া)। এর মধ্যে লালমনিরহাট-সান্তাহার রুটে চলাচল করা লোকাল ট্রেন ৪৮১/৪৮২, লালমনিরহাট-পার্বতীপুরে চলাচল করা ৪১১/৪১২, পার্বতীপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারীর মধ্যে চলাচল করা ৪৫৩/৪৫৪ অন্যতম।
লালমনিরহাট রেল বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) নাজমুল ইসলাম, ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট (ডিটিএস) মোস্তাফিজার রহমান ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (ডিএমই) মমতাজুল ইসলাম বলেন, এই রেল বিভাগের স্টেশনমাস্টার, লোকোমোটিভ মাস্টার, গেটম্যানসহ অন্যান্য পদে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় ১৮টি ট্রেন ও ২০টির মতো স্টেশন বন্ধ রয়েছে।
নিয়মিত জনবলের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক জনবল দিয়ে লালমনিরহাট রেল বিভাগের ট্রেন ও স্টেশনগুলো চালু রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থার কথা ওপরের মহলে নিয়মিতই জানানো হচ্ছে। লোকবল নিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেলেও কবে সংকট মিটবে, তা বোঝা যাচ্ছে না।