জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে সড়কে ১৩০ শিশুর মৃত্যু

সড়ক দুর্ঘটনায় পিষ্ট হয়েছে ছোট্ট শরীরটি। নিথর দেহটি বুকে নিয়ে বিলাপ করছেন মামা। দুর্ঘটনায় বাঁ পা কাটা পড়েছে শিশুটির মায়ের। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।ফাইল ছবি

চলতি বছরের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৮৪৮টি। এতে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ১২ জন ও আহত হয়েছেন ১ হাজার ১৪৬ জন।
আজ শনিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের দেওয়া এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে প্রতিবেদনটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতের মধ্যে ১৪৩ জন নারী ও ১৩০ জন শিশু রয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি, ২৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে সিলেট বিভাগে, ৪২ জনের। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি, ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে কম, দুজনের মৃত্যু হয়েছে সাতক্ষীরা জেলায়। এ ছাড়া ঢাকায় ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন।

তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, যানবাহনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন মোটরসাইকেলচালক ও আরোহীরা। এই দুই মাসে ৪০৩ জন মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী মারা গেছেন। তারপর রয়েছে যথাক্রমে বাসযাত্রী, ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরির যাত্রী, মাইক্রোবাস-ব্যক্তিগত গাড়ি-অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রী, থ্রি-হুইলারের যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম-চান্দের গাড়ি-ডাম্পার-পাওয়ারটিলার) ও প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-বাইসাইকেল আরোহী যাত্রীরা।

দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয়েছে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্প গতির যানবাহন চলাচল, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। দুর্ঘটনা কমাতে এসব সমস্যা সমাধানের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এ ছাড়া একই সময়ে ১২টি নৌ দুর্ঘটনায় ৩৭ জনের মৃত্যু এবং ২৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।