জীবনমান উন্নয়ন ও মানবাধিকার সুরক্ষায় রবিদাস ফোরামের ১১ দফা দাবি
দেশের অনগ্রসর রবিদাস জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা ও মানবাধিকার সুরক্ষায় ১১ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম (বিআরএফ)। একই সঙ্গে ফোরামের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দাবিগুলো সংবলিত স্মারকলিপি দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সোমবার এক মানববন্ধন ও সমাবেশে দাবিগুলো তোলা হয়। মানববন্ধন ও সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিআরএফের সভাপতি চানমোহন রবিদাস।
বিআরএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন রবিদাসের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল ক্বাফি, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র স্কলার প্রদীপ কুমার অধিকারী, বিআরএফের উপদেষ্টা তাহমীন সুলতানা, হিমাংশু সিংহ, বিআরএফের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিরব রবিদাস প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে রবিদাস জনগোষ্ঠী পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার সংকটে পড়েছে। করোনাকালে তাদের অবস্থা আরও কাহিল হয়েছে। এ সময় রবিদাস জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১১ দফা দাবি জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো অবিলম্বে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইনের গেজেটে রবিদাস জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; রবিদাসদের প্রতি অস্পৃশ্যতার চর্চা নিষিদ্ধ করতে সংসদে উত্থাপিত ‘বৈষম্যবিরোধী আইন-২০২২’ পাস করতে হবে; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও সরকারি চাকরিতে রবিদাসদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; ভবিষ্যতে সংসদে রবিদাস জনগোষ্ঠীর জন্য পাঁচটি সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করতে হবে; পাদুকাশিল্পকে জাতীয় শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পাদুকাশিল্পের জন্য আলাদা শিল্পনগরী স্থাপন করতে হবে; সরকারি খাস, পরিত্যক্ত জমি ও দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাসরত ভিটা দখলি শর্তে রবিদাসদের মধ্যে বন্দোবস্ত করতে হবে।
১১ দফা দাবির মধ্যে আরও রয়েছে রবিদাসদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও প্রথার সংরক্ষণ, বিকাশ ও প্রসারে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে; অসহায় রবিদাস জনগোষ্ঠীর সার্বিক অগ্রগতির লক্ষ্যে তাদের মধ্যে সরকারি অনুদান, ভাতা, ত্রাণসামগ্রী ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিতরণ করতে হবে; পাদুকা ও চামড়াশিল্পের বিকাশ এবং শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য সরকারকে একটি বিশেষ কমিশন গঠন করতে হবে; করোনাসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালে ক্ষতিগ্রস্ত রবিদাস জনগোষ্ঠীর পাদুকা শ্রমিকদের বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে এবং জাতীয় বাজেটে পাদুকাশিল্পের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কারখানা স্থাপন ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি যুক্ত করতে হবে।