টাকা জমা দিতে ভোগান্তি

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চুয়াডাঙ্গায় একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করত। কিন্তু আড়াই মাস ধরে ওই ব্যাংক বিআরটিএর হিসাব নম্বরে আর টাকা নিচ্ছে না। তাই যানবাহনের মালিক ও চালকেরা টাকা জমা দিতে ছুটছেন কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ অথবা মেহেরপুরে।
যানবাহনের মালিক ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্ঘটনা ও অপরাধ দমনে সরকার চলতি অর্থবছরের (২০১৫-১৬) প্রথম দিকে সারা দেশে অবৈধ যান চলাচলের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করে। এতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যানবাহন রাস্তায় নামানো অনেকাংশে কমে যায়। বৈধ কাগজপত্র তৈরি করতে যানবাহনের মালিক ও চালকেরা ভিড় করেন বিআরটিএর কার্যালয়ে। যানবাহন নিবন্ধনের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি যানবাহনের মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস, রুট পারমিটও তৈরি করতে চান অনেকে। জেলার গ্রাহকেরা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) চুয়াডাঙ্গা শাখায় টাকা জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সারতেন।
কিন্তু গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে ব্যাংকটি এ খাতে টাকা জমা নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে ইউসিবি চুয়াডাঙ্গা শাখার অপারেশন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান গত মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, ব্যাংকের সঙ্গে বিআরটিএর যে চুক্তি ছিল, তা ১৫ নভেম্বর শেষ হয়েছে। তাই তাঁরা এ খাতে টাকা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নির্দেশ এলে আবারও টাকা নেওয়া হবে।
তাই যানবাহনের মালিক ও চালকেরা টাকা জমা দিতে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ অথবা মেহেরপুরে যাচ্ছেন। শহরের আলী হোসেন সুপার মার্কেটের মুঠোফোন ব্যবসায়ী শাহীনুল কাদির বলেন, নতুন যানবাহন কেনার ১৫ দিনের মধ্যে মালিককে রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমা দিতে হয় বিআরটিএর হিসাব নম্বরে। চুয়াডাঙ্গায় টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ না থাকায় দুই দিন দোকান বন্ধ রেখে তাঁকে কুষ্টিয়া যেতে হয়েছে। অন্য গ্রাহকদেরও একই অবস্থা। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার।
ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা এই হয়রানির জন্য বিআরটিএর কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, আড়াই মাস ধরে এই হয়রানি চললেও বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ এ সমস্যা নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেননি। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, বিআরটিএর স্থানীয় কর্মকর্তারা গত বছরের নভেম্বর মাসে তাঁদের জানান, আরেকটি বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে তাঁদের চুক্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
বিআরটিএর চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের মোটরযান পরিদর্শক এস এম সবুজ বলেন, গ্রাহকদের সমস্যার বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস বলেন, বিআরটিএ যে ১৪টি ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করে, চুয়াডাঙ্গায় তাদের বেশির ভাগের কোনো শাখা নেই। সমস্যার কথা বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই বিষয়টির সমাধান করা হবে।