ট্যানারি বন্ধে সময় ক্ষেপণ করছে শিল্প মন্ত্রণালয়
সাভারের চামড়াশিল্প নগরীতে (ট্যানারি) যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা ট্যানারিগুলো বন্ধ করার ক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয় ইচ্ছা করে সময় ক্ষেপণ করছে বলে মনে করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ জন্য কমিটি উষ্মা প্রকাশ করেছে। কঠিন বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা না থাকলে সংশ্লিষ্ট ট্যানারি বন্ধ রাখার জন্য আবারও সুপারিশ করেছে কমিটি।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথ না হওয়ায় সাভারের চামড়াশিল্প নগরী বন্ধ করে দেওয়ার জন্য গত বছরের আগস্টে সুপারিশ করেছিল সংসদীয় কমিটি। সেই সুপারিশ এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। আজ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, কমিটি মনে করে, শিল্প মন্ত্রণালয় ইচ্ছা করে সময় ক্ষেপণ করছে। কঠিন বর্জ্য পরিশোধনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকলে ট্যানারি চলতে পারে না। কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয় শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।
বৈঠকে বায়ূদূষণ নিয়েও আলোচনা হয়। বায়ূদূষণের জন্য প্রধানত ইটভাটা, গাড়ির জ্বালানি, নির্মাণকাজ ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়। এ সময় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, দেশের কোথায় কোথায় ইটভাটা আছে তা ম্যাপিং করা প্রয়োজন। অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাব রয়েছে। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এ কাজটি করার জন্য কমিটি সুপারিশ করেছে।
সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সংরক্ষিত লাঠিটিলা বনে সাফারি পার্কের রাস্তা করা এবং উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাধ নিয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাস্তা নির্মাণের আগে সংরক্ষিত বনের জমি পরিমাপ করা হবে। বনের জায়গায় কোনো রাস্তা হবে না। মন্ত্রীও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন।
বৈঠকে উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মাণে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকার বিভাগকে সম্পৃক্ত করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা ও বরাদ্দ বাড়াতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ষাটের দশকের পর নতুন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। এখন ১১ হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আছে। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার বাঁধ উপকূলে, যার ৯০০ কিলোমিটারের এখন প্রায় অস্তিত্ব নেই। ১২টি জেলার প্রায় আড়াই কোটি মানুষ এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।
কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, রেজাউল করিম, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এবং শাহীন চাকলাদার বৈঠকে অংশ নেন।