তামাকসেবীদের এ নেশা থেকে বের করে আনতে বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত উপায় হচ্ছে, উচ্চহারে কর আরোপ। তামাকপণ্যে উচ্চহারে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করা হলে, তামাকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
তামাকবিরোধী অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ’–এর উদ্যোগে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে গতকাল বুধবার এক লাইভ অনুষ্ঠানে এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য দেওয়া হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ছিলেন, সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত, সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, উবিনীগ-এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার ও একাত্তর টিভির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট সুশান্ত কে সিনহা। লাইভটি সঞ্চালনা করেন স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ-এর মুখপাত্র নাসির উদ্দীন শেখ।
অনুষ্ঠানে হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘তামাকপণ্যের দাম বাড়লে মানুষ অন্যান্য নেশাদ্রব্যের দিকে ধাবিত হবে—এই ধারণা একদম অমূলক। এটা স্বার্থান্বেষী মহলের প্রচারণা, যাতে তামাকপণ্যে ট্যাক্স ও মূল্য না বাড়ে। তামাক ছাড়া কঠিন, তাই প্রয়োজন তামাকসেবীদের এ নেশা থেকে বের করে আনা। আর সেটার বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত অন্যতম পন্থা উচ্চ ট্যাক্স। তামাকপণ্যে উচ্চহারে সুনির্দিষ্ট ট্যাক্স আরোপ করা হলে, তামাকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যেতে পারব।’
তামাক আইন সংস্কার প্রসঙ্গে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘তামাকপণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৯০%, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ, খুচরা শলাকা সিগারেট বিক্রি বন্ধ, দোকানে দোকানে তামাকের বিজ্ঞাপন বন্ধ, পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ ও “নির্ধারিত ধূমপান এলাকা” উঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবসহ আরও কিছু প্রস্তাবনা সরকারের সামনে আমরা পেশ করেছি। এই সংশোধনগুলোর পাশাপাশি আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।’
দেশে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যে মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে বলে মন্তব্য করে ফরিদা আখতার বলেন, দেশে প্রতি চারজন নারীর একজন তামাকসেবী—এই ভয়াবহ তথ্যের নেপথ্যে মূলত ধোঁয়াবিহীন তামাক। দৃষ্টির আড়ালে থেকে যাওয়া এই ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যে মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। ধোঁয়াবিহীন সব তামাকপণ্যকে ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে এবং উচ্চহারে সুনির্দিষ্ট ট্যাক্স ধার্য করতে হবে।’
তামাকের ভয়াবহতা বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও সরকারি নীতি বাস্তবায়নে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়ে তামাকবিরোধী অনলাইন প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাদের বিভিন্ন তথ্য ও প্রচারণায় অনুপ্রাণিত হয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ তামাক ছেড়েছে এবং অন্যদের উদ্বুদ্ধ করেছে।