তারাগঞ্জে অধিকাংশ সরকারি দপ্তরের ফোন নষ্ট
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বেশির ভাগ সরকারি দপ্তরের ফোনগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এতে এসব দপ্তরের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
তারাগঞ্জ এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা সদরে দুই একর জমির ওপর অবস্থিত উপজেলা এক্সচেঞ্জটি ডিজিটাল করা হয়। এই এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সংযোগের ক্ষমতা রয়েছে ৩৫০টি। কিন্তু উপজেলার সব সরকারি-বেসরকারি কার্যালয় ও আবাসিক এলাকাসহ মোট সংযোগ রয়েছে ৯৫টি। এর মধ্যে ৪৫টি উপজেলা পরিষদ ও এর সংলগ্ন এলাকায়। এসব সংযোগ অধিকাংশ সময় বিকল থাকে।
তারাগঞ্জ বাজারের বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন বলেন, আগে ৩০ দিনের মধ্যে ২০ দিনই তাঁর তারাগঞ্জ বাজারের মুদির দোকানের টেলিফোন লাইনটি খারাপ থাকত। কিন্তু আট মাস ধরে লাইনটি একেবারেই বিকল।
তারাগঞ্জের সাপ্তাহিক তারার আলো পত্রিকার সম্পাদক খবির উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, ‘১০ বছর আগে বাড়ি ও তারাগঞ্জ বাজারের দোকানে সংযোগ নিয়েছি। কিন্তু ঠিকমতো কথা বলতে পারছি না। দুই মাস ধরে দোকানের লাইনটি বিকল হয়ে আছে। কিন্তু নির্ধারিত বিল ঠিকই দিতে হচ্ছে।’
গত বুধবার উপজেলা সমবায় কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার ফোন সেটটি মেঝেতে পড়ে আছে। ওই কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক আবু বক্কর বলেন, ফোনটি নষ্ট। টেবিলে রেখে ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ কী?
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম বলেন, ‘টেলিফোনটি বিকল। এ নিয়ে উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে কথা বলেছি। তবুও ফোনটি সচল করা হচ্ছে না।’ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান বলেন, ‘গত এক মাসে কোনো দিন আমার টেলিফোনে রিং বেজেছে বলে মনে পড়ে না। জরুরি কাজ মুঠোফোনে সারতে হচ্ছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা তৌহিদা বেগম জানান, তাঁদের কার্যালয়ের ফোনও এক মাস ধরে খারাপ। উপজেলায় সমাজসেবা কার্যালয়ের টেলিফোনটিও দুই মাস ধরে নষ্ট। সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, দুই মাস ধরে টেলিফোনে কথা বলতে না পারলেও বিল ঠিকই দিতে হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুল মালেক বলেন, এক মাস থেকে তাঁদের কার্যালয়ের ফোন দুটি নষ্ট। যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবদুর রশিদ জানান, তাঁদের টেলিফোনও নষ্ট। উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ফোনটি অফিসে নেই। ওই কার্যালয়ের গুদামরক্ষক শাহ মোহাম্মদ সুমন বলেন, ফোনটি নষ্ট, তাই কোথাও সরিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মেদ কবীর জামান বলেন, দুই মাস ধরে তাঁদের ফোনও নষ্ট।
এ ব্যাপারে রংপুর এক্সচেঞ্জের উপসহকারী প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলাম গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের সব কার্যালয়ের লাইন ঠিক আছে। কিন্তু সেটগুলো খারাপ। কর্মকর্তারা টেলিফোন সেট না কিনলে আমরা কী করব?’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারাগঞ্জ চৌপথি মহাসড়কের সংস্কারকাজ করার সময় উপজেলা পরিষদে সংযোগ দেওয়া টেলিফোনের তার ছিঁড়ে গেছে। সেগুলো ঠিক করা হচ্ছে। রোববারের (৭ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে উপজেলা পরিষদের সব সংযোগ ঠিক হয়ে যাবে।