সাংবাদিকতা জীবনে কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলাম। তিনি বলেছেন, দুর্নীতিবিরোধী সাংবাদিকতায় তিনি কখনো ভয় পান না। কারণ, মৃত্যু একদিন আসবেই।
গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন রোজিনা ইসলাম। সভার আয়োজন করে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব। শুরুতে সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভায় রোজিনা ইসলাম বলেন, ‘গত বছর পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সচিবালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার শিকার ও গ্রেপ্তার হওয়ার পর দেশ-বিদেশে সাংবাদিকেরা প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিলেন। ইউকে বাংলা ও লন্ডন বাংলা—এ দুই প্রেসক্লাব মানববন্ধন করে আমার মুক্তির দাবি জানিয়েছে। দেশ-বিদেশের সাংবাদিকদের এমন সহযোগিতার জন্য আমি আজ আপনাদের সামনে। আমার জীবনে সবার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
আলোচনায় রোজিনা ইসলাম অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় তাঁর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘দুর্নীতিবিরোধী সাংবাদিকতায় আমি কখনো ভয় পাই না। কারণ, মৃত্যু তো একদিন আসবেই। সুতরাং সৎ সাংবাদিকতার মাধ্যমে জনকল্যাণে কাজ করে মারা গেলেও তাতে দুঃখের কোনো কারণ নেই। ২০ বছর বয়স থেকেই সাংবাদিকতা করছি। আমার দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করিনি।’
গত বছরের ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতন করা হয়। একই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাঁকে। এক সপ্তাহের মাথায় গত বছরের ২৩ মে তিনি জামিনে ছাড়া পান। এর পর থেকে আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদক এমদাদুল হক চৌধুরী। আলোচনায় তিনি বলেন, ‘সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতায় যত প্রতিবন্ধকতা আসুক, আমাদের সেই চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে। কারও হুমকি-ধমকি ভয় পেলে সৎ সাংবাদিকতা হেরে যাবে।’
এ সময় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ বলেন, রোজিনা ইসলামের সাহসী সাংবাদিকতা অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।