ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডে নির্বাচন করার অনুরোধ জানিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে (ইসি) চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ইসি এখনো বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তবে ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমান আইনে নতুন এসব ওয়ার্ডে নির্বাচন করা কঠিন। কারণ, নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হলে সেখানে কীভাবে নির্বাচন হবে সে বিষয়ে আইনে সুস্পষ্ট কিছু বলা নেই। এ জন্য আগে আইন সংশোধন করতে হতে পারে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত ১৬টি ইউনিয়নকে ৩৬টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করে গত জুলাই মাসের শেষের দিকে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর ফলে ঢাকা উত্তরে ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়ে মোট ওয়ার্ড হয়েছে ৫৪টি। আর দক্ষিণে ১৮টি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হয়ে মোট ওয়ার্ড হয়েছে ৭৫টি।
উত্তরে যুক্ত ইউনিয়নগুলো হচ্ছে বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, বেরাইদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও হরিরামপুর। এই আট ইউনিয়নকে ১৮ ওয়ার্ডে রূপান্তর করায় উত্তরের ওয়ার্ড সংখ্যা ৩৬ থেকে ৫৪-তে উন্নীত হলো। আর দক্ষিণে যুক্ত শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মান্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ ইউনিয়নকে ১৮ ওয়ার্ড করায় দক্ষিণের ওয়ার্ড সংখ্যা বেড়ে ৫৭ থেকে ৭৫ হয়েছে।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দুই-তিন দিন আগে স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠি পেয়েছেন। নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাস করতে হবে। তাঁরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্রুত ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাস করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। এটি পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশনে বিষয়টি তোলা হবে এবং নতুন ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা নতুন ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচন করার বিষয়ে আইনি দিক পর্যালোচনা করছেন। সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী ব্যক্তিদের মেয়াদ পাঁচ বছর। দুই সিটি করপোরেশনে বর্তমানে নির্বাচিত ব্যক্তিদের মেয়াদ এর মধ্যে দুই বছর অতিক্রম করেছে। এখন নতুন করে ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচন হলে তাঁরাও পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের মেয়াদ বর্তমান মেয়রদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দুই বছর থেকে যাবে। তা ছাড়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একজন ভোটার মেয়র পদসহ তিনটি পদে ভোট দেন। নতুন ওয়ার্ডগুলোতে তাঁরা মেয়রের ভোট দেবেন কি না, এ প্রশ্ন আসবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সিটি করপোরেশনে চলমান মেয়াদের মধ্যে নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হলে সেখানে কত দিনের মধ্যে, কীভাবে নির্বাচন হবে, নতুন নির্বাচিত ব্যক্তিদের মেয়াদ কত দিনের হবে—এসব বিষয়ে আইনে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। তাঁরা মনে করছেন, এই অবস্থায় নির্বাচন করতে গেলে অনেক ধরনের আইনি জটিলতা তৈরি হবে। তাই আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে নতুন ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচন করতে হবে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আশা করছেন আইনি জটিলতা হবে না। স্থানীয় সরকার আইনি বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করছে। নির্বাচনের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি, এ বিষয়গুলো কমিশন দেখবে।