নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া র্যাব-১১-এর সদস্য এএসআই বজলুর রহমান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এইচ এম শফিকুল ইসলামের আদালতে পৃথক দুটি মামলায় তিনি এই জবানবন্দি দেন। অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কে এম ফজলুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, বজলুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সাতজনকে অপহরণ ও খুনের ঘটনার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া র্যাবের অন্য সদস্যরা কে কী দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তিনি নিজে কী দায়িত্ব পালন করেছেন, তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে মাগুরা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া র্যাবের সদস্য নুরুজ্জামান গত বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ সময় তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
সাত খুনের ঘটনায় অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত সোমবার রাতে র্যাব-১১-এর এএসআই বজলুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ ও হাবিলদার নাছিরউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। সাত খুনের ঘটনায় হওয়া দুটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ মণ্ডল বলেন, রিমান্ডের তৃতীয় দিনের মাথায় র্যাবের এএসআই বজলুর রহমান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজন অপহৃত হন। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও পরদিন ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় তাঁর জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অপর একটি মামলা করেন। সাত খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত র্যাবের ১৫ সদস্যসহ মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে র্যাবের ১৩ সদস্যসহ ১৪ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপরদিকে র্যাবের নয় সদস্যসহ মোট ১৬ জন আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।