নির্ধারিত জায়গায় বাঁধের দাবিতে মানববন্ধন
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের পেয়ারপুর গ্রামে নির্ধারিত জায়গায় ক্লোজার (আড়াআড়ি বাঁধ) নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন সাতটি গ্রামের বাসিন্দারা। গত বুধবার গ্রামের তালুকদারবাড়ি খেয়াঘাট এলাকায় এ মানববন্ধন করা হয়।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য দেন ইউপি সদস্য নুর জামাল ও ফোরকান খান, গাজী মুসফিকুর রহমান প্রমুখ। এতে পেয়ারপুরসহ নুরপুর, ফুলবুনিয়া, রসুলপুর, জামালপুর, রহমতপুর, মিরপুর গ্রামের বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পেয়ারপুর গ্রামের বড়ইতলা নদীর ওপর তালুকদারবাড়ি খেয়াঘাট থেকে উত্তর-দক্ষিণে ১১০০ ফুট ক্লোজার করার জন্য দরপত্র আহ্বান করে ইতিমধ্যে ঠিকাদার নিযুক্ত করে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি আট লাখ টাকা। অথচ এখন ওই পয়েন্টে ক্লোজার না করে তিন কিলোমিটার পূর্ব দিকে ক্লোজার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য সাহানারা বেগম, রহিমা আক্তার রানী ও জাহিদা বেগম বলেন, এই ক্লোজার করার দাবিটি দীর্ঘদিনের। গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত বড়ইতলা নদীসংলগ্ন পূর্ব-পশ্চিমমুখী পুরোনো ৪৭/২ বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটি ঝুঁকির মধ্যে আছে। যেকোনো দুর্যোগে বাঁধসংলগ্ন অন্তত তিন হাজার ৫০০ একর কৃষিজমি প্লাবিত হয়। বারবার ক্ষতির কারণে তাঁরা এ দাবি জানাচ্ছিলেন। দাবি পূরণ হলেও যেখানে বাঁধ করার কথা সেখানে করা হচ্ছে না।
পেয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধা গাজী রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের খুশিমতো জায়গা নির্ধারণ করে ক্লোজার করার চিন্তা করছে। নির্ধারিত পয়েন্ট থেকে সরিয়ে যেখানে তারা ক্লোজার করার কথা ভাবছে, সেখানে ৯৫০ ফুটের মতো বাঁধ দিলেই হয়। এতে তাদের ১৫০ ফুট বাঁধ কম দেওয়া লাগে। শুধু আর্থিকভাবে সুবিধার জন্য তারা এ কাজ করছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফারুক আহমেদের পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, যে পয়েন্টে ক্লোজার করার কথা ছিল, সেখান থেকে করা হলে দুটি স্লুইসগেট (জলকপাট) ক্লোজারের ভেতরে পড়ে। এগুলো ভেতরে রেখে কখনো বাঁধ করা যায় না। আবার এখান থেকে ৩০০ ফুট দূরে সরিয়ে চিন্তা করার পর সেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি পড়ে দেখে ওই চিন্তাও বাদ দেওয়া হয়। তা ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েই এখন নতুন জায়গা চিহ্নিত করে ক্লোজার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে ব্যক্তিগত খেয়ালখুশির কিছু নেই। ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওখানের সমস্যার কথা আমরা শুনেছি। সরেজমিনে যাচাই না করে কিছু বলতে পারছি না। আমার ঊর্ধ্বতনকে বিষয়টি জানাব।’