নৌকার পক্ষে কাজ না করায় হামলার অভিযোগ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ না করায় আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর পাঁচ সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকেরা উলিপুর-রাজারহাট সড়ক অবরোধ করে প্রায় দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। আজ সোমবার দুপুরে উত্তর দলদলিয়া ক্ষত্রিয়পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, উলিপুর দলদলিয়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন লিয়াকত আলী। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান মুন্সি ওরফে রানা। তাঁর প্রতীক মোটরসাইকেল।
আজ সোমবার সকালে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাঈদুল ইসলাম ও নৌকার প্রার্থী লিয়াকত আলীর ভাতিজা হাসানুর ইসলামের নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবক উত্তর দলদলিয়া ক্ষত্রিয়পাড়া এলাকায় একটি চায়ের দোকানে আসেন। সেখানে মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী নিখিল চন্দ্র রায় চা খাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁরা নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ না করার অভিযোগ তুলে নিখিলের ওপর হামলা চালান। এ সময় নিখিলকে বাঁচাতে তাঁর পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচজন আহত হন। আহত ব্যক্তিরা হলেন নিখিল চন্দ্র রায় (৪৫), হরিশ চন্দ্রের স্ত্রী কল্পনা রানী (৬০), ছেলে বাসু দেব (২৭), গিরিশ চন্দ্রের স্ত্রী সৌধা রানী (৭০), ছেলে রতিন্দ্র নাথ (৩৫)। তাঁরা সবাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে মোটরসাইকেলের সমর্থকেরা উলিপুর-রাজারহাট সড়কে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী যানবাহন আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে শান্ত করলে, তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।
চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর উলিপুর উপজেলার ১৩টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দলদলিয়া ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান মুন্সি বলেন, নৌকার প্রার্থী ও কর্মীরা সাধারণ ভোটারদের শুরু থেকেই হুমকি দিয়ে আসছেন। নির্বাচনের দিন নৌকার বিপক্ষে কাউকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেবেন না বলে প্রচার চালাচ্ছেন। এ কারণে সোমবার তাঁরা তাঁর কর্মী-সমর্থকের ওপর কোনো কারণ ছাড়াই হামলা করেন।
এ প্রসঙ্গে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী লিয়াকত আলী জানান, মোটরসাইকেলের সমর্থকেরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ওই এলাকার ভোটারদের মধ্যে টোকেন বিতরণ করছিলেন। এ সময় তাঁর ভাতিজাসহ কয়েকজন তাঁদের আটক করেন। এ ঘটনায় সেখানে সামান্য হাতাহাতি হয়। এ বিষয়ে তাঁরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।
দলদলিয়া ইউপি নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তারিফুর রহমান সরকার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।