পথের জন্য প্রতিপক্ষ গুঁড়িয়ে দিল নারীর পা

অপরাধপ্রতীকী ছবি

ঢাকায় ইট ভেঙে জীবনের চাকা ঘোরাতেন বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া শেফালী বেগম। কিছু টাকা জমিয়ে দেড় যুগ পর গ্রামে ফিরে পৈতৃক ভিটায় ঘর তোলেন তিনি। কিন্তু ঘরে আসা-যাওয়ার পথ নিয়ে বিরোধ বাধের প্রতিবেশীর সঙ্গে। এ বিরোধের জেরে কুপিয়ে-পিটিয়ে তাঁর পা দুটি প্রায় গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মোস্তফাপুর গ্রামে।

শেফালীর পরিবারের অভিযোগ, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথের জায়গা নিয়ে তাদের সঙ্গে স্থানীয় মোবারক ফকির ও কাশেম ফকিরের অনেক দিনের বিরোধ। শুক্রবার বিকেলে এ নিয়ে শেফালীর সঙ্গে কাশেমের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে মোবারক ফকির, কাশেম ফকির, বাবুল ফকির, নাসির ফকির ও মিরাজ ফকির তাঁকে তাঁর ঘরের সামনে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। শেফালী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁর দুই পা রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে রামদার উল্টো পিঠ ও চাকু দিয়ে ক্ষতবিক্ষত পা দুটোকে উপর্যুপরি আঘাত করে থেঁতলে দেওয়া হয়। এ সময় মাকে রক্ষায় ছুটে এলে ছেলে আল-আমিন (৩৫) ও ছেলের বউ পারভিন বেগমকেও (২৫) পিটিয়ে আহত করেন তাঁরা। শেফালী আর কখনো দুই পায়ে দাঁড়াতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এভাবে মারধর করে মা-ছেলে ও ছেলের বউকে ফেলে রেখে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, শেফালীর অবস্থা খুবই শঙ্কাজনক। পা দুটো গুঁড়িয়ে গেছে। চাকুর অসংখ্য কোপে পা দুটো ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।

এদিকে নির্যাতনের ওই ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছেন মোবারক, কাশেম, বাবুল, নাসির ও মিরাজ। মুঠোফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’