ফের ময়নাতদন্তের জন্য শামারুখের লাশ উত্তোলন

ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশের ১০ দিন পর আজ বৃহস্পতিবার চিকিৎসক শামারুখ মাহজাবিনের লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সালামের নেতৃত্বে যশোরের কারবালা কবরস্থান থেকে শামারুখের লাশ তোলা শুরু হয়, শেষ হয় বেলা সাড়ে ১১টায়।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
লাশ তোলার সময় সেখানে ময়নাতদন্তের জন্য গঠিত কমিটির সদস্য যশোর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক হোসাইন সাফায়েত ও জেসমিন সোমাইয়া উপস্থিত ছিলেন। আরও ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ সোহেল হোসাইন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এএসপি মুন্সি রুহুল কুদ্দুস ও শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম।
মুন্সি রুহুল কুদ্দুস লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে জানালেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। অধিকতর তদন্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হবে।
শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ১৯ দিন পর লাশ তোলা হলো। আমরা আশাবাদী হয়তো সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। আমার গায়ের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমি এ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে যাব।’
ঢাকার ধানমন্ডিতে যশোর-৫ আসনের সরকারদলীয় সাবেক সাংসদ খান টিপু সুলতানের বাসায় গত ১৩ নভেম্বর শামারুখের রহস্যজনক মৃত্যু হয় । শামারুখ সাংসদের পুত্রবধূ। ১৪ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে শামারুখের লাশ যশোর শহরের কারবালা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ঘটনার দিন রাতেই শামারুখের বাবা মো. নুরুল ইসলাম মেয়ের শ্বশুর খান টিপু সুলতান, তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক জেসমিন আরা ও শামারুখের স্বামী হুমায়ুন সুলতানকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় শামারুখকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পরে হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। অন্য দুই আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
২৩ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ থেকে ধানমন্ডি থানায় পাঠানো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শামারুখের মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যাজনিত’ বলে উল্লেখ করা হয়। পরদিন ময়নাতদন্তের ওই প্রতিবেদনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে শামারুখের বাবা নূরুল ইসলাম লাশের পুনঃময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের কাছে আবেদন করেন। আদালত শামারুখের লাশ ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তুলে নতুন করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা নিতে যশোরের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন।